নিজস্ব প্রতিবেদক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য রাত ৮টার পর সারা দেশের দোকান, শপিং মল, মার্কেট, বিপণিবিতান, কাঁচাবাজার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সেই সিদ্ধান্ত আগামীকাল সোমবার থেকেই কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
তবে ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে সময় চেয়েছেন। এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী ১০ জুলাই কোরবানি ঈদ।
এ জন্য ১ জুলাই থেকে ১০ জুলাই রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা। এ প্রস্তাব সামারি (সারাংশ) আকারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে।
এই নির্দেশনার বাইরে থাকবে সিগারেট, পান-বিড়ি, বরফ, খবরের কাগজ, সাময়িকী বিক্রির দোকান এবং দোকানে বসে খাওয়ার (হালকা) নাশতা বিক্রির খুচরা দোকানসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। তবে বন্ধ থাকবে মুদির দোকান।
এদিকে ক্লাব, হোটেল, রেস্তোরাঁ, খাবার দোকান, সিনেমা বা থিয়েটারের মতো জায়গাগুলো খোলা রাখার ক্ষেত্রে কোনো কঠোরতা দেওয়া হয়নি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহী জানান, তরি-তরকারি, মাংস, মাছ, দুগ্ধজাতীয় সামগ্রী, রুটি, পেস্ট্রি, মিষ্টি এবং ফুল বিক্রির দোকান, ওষুধ, অপারেশন সরঞ্জাম, ব্যান্ডেজ অথবা চিকিৎসাসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান, দাফন ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির দোকান, তামাক, সিগারেট, পান-বিড়ি, বরফ, খবরের কাগজ, সাময়িকী বিক্রির দোকান এবং দোকানে বসে খাওয়ার (হালকা) নাশতা বিক্রির খুচরা দোকান, খুচরা পেট্রোল বিক্রির জন্য পাম্প এবং মেরামত কারখানা নয় এমন মোটর গাড়ির সার্ভিস স্টেশন, নাপিত এবং কেশ প্রসাধনীর দোকান, যেকোনো ময়লা নিষ্কাশন অথবা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, যেকোনো শিল্প, ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান যা জনগণকে শক্তি আলো অথবা পানি সরবরাহ করে, ক্লাব, হোটেল, রেস্তোরাঁ, খাবার দোকান, সিনেমা অথবা থিয়েটার এবং ডক, জেটি, স্টেশন অথবা বিমানবন্দর এবং পরিবহন সার্ভিস টার্মিনাল অফিস রাত ৮টার পরও খোলা রাখা যাবে। এর বাইরে সকল দোকানপাট বন্ধ থাকবে বলে জানান তিনি।
এর আগে গত ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে পদক্ষপে গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।
এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬-এর ১১৪ ধারার বিধান কঠোরভাবে প্রতিপালন করে সারা দেশে রাত ৮টার পর দোকান, শপিং মল, মার্কেট, বিপণিবিতান, কাঁচাবাজার ইত্যাদি খোলা না রাখার বিষয়টি যথাযথভাবে নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে দীর্ঘদিন থেকে রাত ৮টার পর দেশে সব ধরনের দোকানপাট বন্ধের নিয়ম করেছে সরকার। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা মানা হয় না। এবার ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে জ্বালানি তেলসহ এলএনজির দাম বাড়তে থাকায় সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির অংশ হিসেবে এ নিয়মে কড়াকড়ি করতে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন : সরকার আরো ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দিল সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যার্তদের জন্য