সারাদেশে ত্যাগের মহিমায় চিরভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা আজ রোববার (১০ জুলাই) উদযাপিত হবে। ঈদুল আজহার প্রধান জামাত রাজধানীর হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়। তবে আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলে বা অন্য কোনো কারণে জাতীয় ঈদগাহে জামাত না হলে ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে এবারও ঈদুল আজহার পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৭টা, দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায়, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায়, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টা, পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ঈদের জামাত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়।
এছাড়া ঐতিহাসিক শোলাকিয়াসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠে স্থানীয়দের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুসারে জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আজহা পালিত হয়। ঈদুল আজহা আমাদের দেশের মানুষের কাছে ‘কোরবানির ঈদ’ নামেই পরিচিত।
ইসলাম ধর্মমতে, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য হজরত ইবরাহিম (আ.) তাঁর ছেলে হজরত ইসমাইলকে (আ.) কোরবানি করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু আল্লাহর কৃপায় হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়। সেই ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পশু কোরবানি করে থাকে। উদ্দেশ্য আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করা। ঈদের পর দুই দিন পর্যন্ত (১১ ও ১২ জিলহজ) পশু কোরবানি করার বিধান রয়েছে। কোরবানি দেওয়া আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য ওয়াজিব। সাধারণত উট, দুম্বা, গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া এসব পশুই কোরবানি করার বিধান রয়েছে। তবে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে সব লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, ক্রোধ, স্বার্থপরতা তথা ভেতরের পশুত্বকে ত্যাগের মধ্য দিয়ে আত্মশুদ্ধি লাভের ভেতরেই রয়েছে কোরবানির প্রকৃত তাৎপর্য।
এই ঈদে পশু কোরবানিই প্রধান ইবাদত। ঈদের জামাত আদায় করে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়বেন কোরবানির জন্য। ঈদের জামাতে ব্যক্তি, সমাজ, দেশ, মুসলিম উম্মাহ এবং সারাবিশ্বের শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা হবে।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, বিএনপি মহাসচিব ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা বাণী দিয়েছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো ঈদ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে। ঈদের দিন সরকারিভাবে হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা ও শিশু সদনে উন্নত ও বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।
এদিকে এবার ঈদ যেন বিষাদে রূপ না নেয়- সে বিষয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের অভিমত, অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। করোনা সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
আরো পড়ুন : শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে পদত্যাগ করবেন ১৩ জুলাই