নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগে বগুড়ায় শূন্য ঘোষিত দুটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র তুলেছেন আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। আসন দুটি হলো বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর)।
আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বগুড়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এ দুই আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র তোলেন তিনি।
এরপর বগুড়া জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা মাহমুদ হাসানের সঙ্গে দেখা করে সিংহ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগ্রহের কথা জানান হিরো আলম। এ বিষয়ে মাহমুদ হাসান সাংবাদিকদের বলেন, অন্য কেউ না চাইলে সিংহ প্রতীক বরাদ্দে সমস্যা নেই। তবে একাধিক প্রার্থী একই প্রতীক চাইলে লটারি করে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।
অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ তিনটি আসনে প্রার্থী হতে পারবেন। হিরো আলম দুটি আসনের মনোনয়নপত্র তুলেছেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় তাঁকে সঙ্গে প্রতিটি আসনের ন্যূনতম ১ শতাংশ ভোটারের সইসহ সমর্থনসূচক তালিকা দিতে হবে। এ সময় হিরো আলম বলেন, ‘দুটি আসনেই ১ শতাংশ করে ভোটারের সই সংগ্রহ করেছি।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়া-৪ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯ জন। বিধি অনুযায়ী, এই আসনে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ৩ হাজার ২৮৫ জন ভোটারের সই করা তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে। বগুড়া-৬ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ১০ হাজার ৭৪৩ জন। এই আসনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে ৪ হাজার ১৭৫ ভোটারের সই করা তালিকা দাখিল করতে হবে।
এর আগে বগুড়ার দুটি আসনে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চেয়ে পাননি হিরো আলম। এরপর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দেন তিনি।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম দাখিল করেছিলেন হিরো আলম। যাচাই-বাছাইয়ের দুই দফায় তাঁর মনোনয়ন বাতিল হয়। পরে উচ্চ আদালতে গিয়ে প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি। সেবার সিংহ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন হিরো আলম। তবে নির্বাচনের দিন কারচুপি ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
হিরো আলম আরও বলেন, বগুড়া এখন অবহেলিত। ভোটারদের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে জেতার পর প্রতিনিধিরা সংসদে গিয়ে সাধারণ মানুষের কথা বলেন না। তিনি নির্বাচিত হলে সংসদে গিয়ে মাটি ও মানুষের কথা তুলে ধরবেন। বগুড়ায় বিমানবন্দর, সিটি করপোরেশন, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের ব্যবস্থা করবেন। সর্বোপরি গরিব ও দুঃখী মানুষের পাশে থাকবেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়া-৪ আসনে আজ পর্যন্ত সাতজন মনোনয়নপত্র তুলেছেন। তাঁরা হলেন মহাজোটের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের (ইনু) এ কে এম রেজাউল করিম (তানসেন), জাতীয় পার্টির শাহীন মোস্তফা কামাল, স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন (হিরো আলম), গোলাম মোস্তফা, ইলিয়াস আলী, আবদুল জব্বার প্রামাণিক, কামরুল হাসান সিদ্দিকী।
এদিকে বগুড়া-৬ আসনে আজ পর্যন্ত নয়জন মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন দলের জেলার সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান। তিনি ছাড়াও মনোনয়নপত্র তুলেছেন জাতীয় পার্টির নূরুল ইসলাম (ওমর), জাসদের ইমদাদুল হক, গণফ্রন্টের আফজাল হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন (হিরো আলম), রাকিব হাসান, ব্যবসায়ী আবদুল মান্নান ও জেলা সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি মাছুদার রহমান (হেলাল)।