রাজশাহীর গোদাগাড়ী সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে কেজি কেজি হেরোইন ঢুকছে দেশে। গোদাগাড়ী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে লাখ লাখ টাকার হেরোইন উদ্ধার করছে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু অভিযানেও থেমে নেই হেরোইনের এ কারবার। ফের রমরমা হয়ে উঠেছে হেরোইনের স্পট। জানা গেছে, ৫ জানুয়ারি র্যাব-৫-এর রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের একটি দল গোদাগাড়ী পৌরসভার মাদারপুর মহল্লায় অভিযান চালিয়ে ৫২০ গ্রাম হেরোইনসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করে। ৯ জানুয়ারি র্যাবের একই ক্যাম্পের একটি দল গোদাগাড়ীর সিঅ্যান্ডবি মোড় এলাকায় মুচিবেশে হেরোইন পাচারের সময় একজনকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ৫০ লাখ টাকা মূল্যের ৫০০ গ্রাম হেরোইন। র্যাবের বড় অভিযানগুলোর মধ্যে গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ২ কেজি ৬০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার হয় মাদারপুর গ্রামের এক বাড়ি থেকে। র্যাব-৫-এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের সদস্যরাও রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় এসে মাদকবিরোধী অভিযান চালাচ্ছেন। ৭ জানুয়ারি র্যাব-৫-এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের একটি দল গোদাগাড়ীর মহিষালবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫২০ গ্রাম হেরোইনসহ গ্রেফতার করে দুজনকে। সম্প্রতি হেরোইনের বড় চালান ধরেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশও (বিজিবি)। বিজিবির গোদাগাড়ী সীমান্ত ফাঁড়ির একটি দল মাটিকাটা গ্রামে অভিযান চালিয়ে ১ কেজি ৬০০ গ্রাম হেরোইন জব্দ করে। শহর থেকে গিয়ে গোদাগাড়ীতে মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়েছেন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরাও। গত কয়েক দিনেই বেশকিছু হেরোইন উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ। গ্রেফতার করেছে কয়েকজনকে। স্থানীয়রা বলছেন, মাঝে গোদাগাড়ী এলাকায় হেরোইনের কারবার কিছুটা কম ছিল। এখন আবার রমরমা হয়ে উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। এলাকার শীর্ষ মাদক কারবারিরা আবার এলাকায় ফিরেছেন। থানার চারপাশের এলাকাতেই চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। গোদাগাড়ীর মাদারপুর, মহিষালবাড়ী, সুলতানগঞ্জ ও ডিমভাঙা এলাকা থেকেই সবচেয়ে বেশি হেরোইন উদ্ধার হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় রাজশাহীর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে যাদের নাম এসেছে তাদের মধ্যে প্রথম ১৫ জনের বাড়ি গোদাগাড়ী উপজেলায়। তারা হলেন- রবিউল ইসলাম রবি (৩৯), তোজাম্মেল মেম্বার (৫০), জাহাঙ্গীর (৪০), নওশাদ আলী (৬৪), শাহীন (৩৮), হযরত আলী (৩৯), নাজিবুর (৩৯), হায়দার আলী (৪৭), সোহেল চেয়ারম্যান (৩২), সহিদুল ইসলাম (৩৫), জিয়া (৩৫), আলমগীর (৩৫), ইসমাইল (৪২), মনিরুল ইসলাম (৩৮) ও টিপু (২৯)।
এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে তালিকায় থাকা এ ১৫ জনের মাদক বেচাকেনায় যুক্ত থাকার বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের বেশির ভাগের বিরুদ্ধে মাদক ও চোরাচালানের মামলাও আছে।
জেলা পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন জানান, ‘মাদককে কোনো ছাড় দেওয়া হয় না। অভিযানে উদ্ধার ও গ্রেফতার হচ্ছে মানে পুলিশ তৎপর আছে। তালিকা ধরে ধরে নজরদারি রাখা হচ্ছে। তার পরও অনেকে গোপনে কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন। শিগগিরই সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে হেরোইন সিন্ডিকেট গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।’
আরো পড়ুন : আজ জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী