স্টাফ রিপোর্টার: অনলাইনে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা আয়ের ফাঁদে ফেলে প্রতারণা চক্রের ৩ সদস্যকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে আত্মসাৎকৃত ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা এবং ৪টি মোবাইল জব্দ করা হয়। গতকাল বিকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিটের পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- আল ফয়সাল, আরেফা বেগম ও নিজাম উদ্দিন। জানা যায়, দুবাই প্রবাসী হাটহাজারীর বাসিন্দা সম্রাট (২৬) আউটসোর্সিয়ের নামে টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে forttunemix.com নামে একটি ওয়েবসাইট খুলেন।
এই কাজে বাংলাদেশ থেকে তাকে সহযোগিতা করতো তার বড় ভাই আল ফয়সাল, মা আরেফা বেগমসহ বেশ কয়েকজন প্রতিবেশী। এই প্রতারক চক্র বিভিন্ন বয়সী মানুষকে টার্গেট করে এসএমএস পাঠাতে থাকে। সেখানে বলা হতো, আপনি চাকরির পাশাপাশি পার্টটাইম কাজ করে বাড়তি আয় করতে পারবেন। পরবর্তীতে এই কথা বিশ্বাস করে বাড়তি ইনকামের কথা চিন্তা করে অনেকেই অনলাইন আউটসোর্সিং কাজে যোগ দেয়। পরবর্তীতে এই মানুষরা টেলিগ্রামে তাদের সঙ্গে বার্তা আদান-প্রদান করতে থাকেন।
অনলাইন প্রতারকরা ভিকটিমদের বলেন, আপনি আমাদের পাঠানো ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন এবং প্রদত্ত কাজগুলো করলে মোটা অঙ্কের পেমেন্ট পাবেন। অ্যাকাউন্টে এই টাকা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত জমা হতে থাকবে।
এভাবে কাজ করতে করতে অল্পতেই ভিকটিমের উক্ত ওয়েবসাইটের অ্যাকাউন্টে ১-২ লাখ টাকা জমা হয়। এর মধ্যে অনলাইন প্রতারকরা ভিকটিমদের জানান যে, আপনি অনলাইনে কাজ করতে গিয়ে কিছু ভুল করেছেন। যার কারণে আপনার কিছু পয়েন্ট কাটা গেছে। আপনার অ্যাকাউন্টের জমাকৃত টাকা তুলতে হলে প্রিপেমেন্ট করতে হবে। আর জমাকৃত টাকা উত্তোলনের লোভে পড়ে প্রতারকদের চাহিদামতো টাকা জমা দিলে আবার তাদের কাজে ভুল হয়েছে বলে টাকা চাওয়া হয়। এভাবে ধাপে ধাপে কারও কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা, কারও কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা, কারও কাছ থেকে ২২ লাখ টাকাসহ কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই প্রতারক চক্রটি।
নগর পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিটের উপ-কমিশনার (বন্দর-পশ্চিম) মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, চক্রটি পরিচালিত হচ্ছে দুবাই থেকে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বাংলাদেশিদের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই চক্রটি। এই চক্রের একজন প্রধান হলেন হাটহাজারীর সম্রাট, আরেকজন সাতকানিয়ার মান্নান। তারা দুবাই অবস্থান করে পান্নি, নাবিলা, জাহান, ক্রিস্টাইন নামসহ আরও বিভিন্ন নামে ছদ্মবেশ ধারণ করে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভুয়া আউটসোর্সিংয়ের কথা বলে অনলাইন প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিতো। এই প্রতারক চক্রটি দেশব্যাপী বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। ইংলিশ পড়তে এবং লিখতে জানে এমন ব্যক্তিদের টার্গেট করে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের উত্তর দেয়া থেকে শুরু হয় প্রতারণার যাত্রা।
আরো পড়ুন : আর মাত্র ১০টি ম্যাচ হারলেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হারের বিশ্ব রেকর্ড হবে মুশফিকের