অবহেলিত শহিদ কিশোর টিটোর সমাধিস্থল ধুয়ে মুছে শ্রদ্ধা জানালেন আশুলিয়ার সাংবাদিকরা

ইতিহাস-ঐতিহ্য তথ্য-প্রযুক্তি প্রচ্ছদ মুক্তমত মুক্তিযুদ্ধ শিক্ষা শিল্প-সাহিত্য শিশু/কিশোর হ্যালোআড্ডা

মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখসমরে পাক বাহিনীর বুলেটে প্রাণ দিয়েছিলেন কিশোর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর টিটো। তিনি মানিকগঞ্জের উত্তর সেওতা গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর কিশোর টিটোর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে হানাদারমুক্ত হয় সাভার।

অথচ, বিজয়ের ৫৩ বছরেও সাভারমুক্ত দিবসে অকুতোভয় সেই বীর মুক্তিযোদ্ধার সমাধিস্থলটি পড়ে রয়েছে অনেকটাই অবহেলায়। ১৯৯৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর নবম পদাতিক ডিভিশনের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে সাভার দুগ্ধ খামার গেটসংলগ্ন শহিদ টিটোর সমাধিটির ফলক উন্মোচন করেন। এরপর থেকে স্বাধীনতার এই বীর শহিদের সমাধিটির ব্যাপারে নজর নেই স্থানীয় প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনৈতিক নেতাসহ সংশ্লিষ্টদের।

প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর সাভারমুক্ত দিবসে শুধু স্থানীয় সাংবাদিকরা এই সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে এলেও খোঁজ মেলে না প্রশাসনের। আশুলিয়া প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক মোহাম্মদ খোকা চৌধুরী ও সদস্য সচিব সোহেল রানা বলেন, প্রতি বছরের মতো ১৪ ডিসেম্বর সাভার মুক্ত দিবসে স্থানীয় সাংবাদিকরা নিজ উদ্যোগে শহিদ টিটোর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন।

জাতির এই বীর সন্তানের সমাধিটির এখন নাজুক অবস্থা। ধুলাবালি আর ময়লা আবর্জনায় শ্রদ্ধা জানানোর পরিবেশ না থাকায় সংবাদকর্মীরা নিজেরাই ধুয়ে মুছে পরিচ্ছন্ন করে শ্রদ্ধা জানান।

স্থানীয় সাংবাদিকদের সমন্বয়কারী বণিক বার্তার প্রতিনিধি সোহেল রানা, মর্নিং পোস্টের জাহাঙ্গীর হোসেন সাগর, বায়ান্ন টিভির আহমাদ সোহান সিরাজী, ডেইলি ট্রাইব্যুনালের এস আর জয়, দৈনিক ভোরের আকাশের কামরুল হাসান রুবেল, দৈনিক মুক্ত খবরের ফয়জুল ইসলাম, সকালের সময়ের আহমেদ জীবন, বার্তা বাজারের আল মামুন খান, আলোকিত বাংলাদেশের ইমদাদুল হক, নেক্সাস টিভির শিফাত মাহমুদ ফাহিম, স্বাধীন বাংলার মো. ইয়াসিন, বিজনেস বাংলাদেশের রাশেদুল ইসলাম সোহাগ, বাংলাদেশ বুলেটিন ডটকমের সাকিব আসলাম, প্রতিদিনের বাংলাদেশের শরিফুল ইসলাম ফাহিম, দৈনিক সময়ের কাগজের মাসুদুর রহমান রুবেল এবং সাংবাদিক সিদ্দিকুর রহমানসহ অন্যরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

২নং সেক্টর কমান্ডার ও সাভার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা চেতনা বাস্তবায়ন কমিটির সাবেক সভাপতি কাইয়ুম খান জানান, কিশোর মুক্তিযোদ্ধা টিটোর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে সাভার হানাদারমুক্ত হয়। তবে, দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হলেও সত্য যে, বিজয়ের ৫৩ বছরেও সাভার হানাদারমুক্ত দিবস পালনে উপজেলা প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই। এমনকি শহিদ টিটোর সমাধিতেও জানানো হয় না শ্রদ্ধা।

জানতে চাইলে সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবুবকর সরকার বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে আলোচনা করে অচিরেই শহিদ টিটোর বিষয়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে। এই তথ্যের ভিত্তিতেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

আরো পড়ুন : ব্যবসায়ীর জায়গা দখল চেষ্টার অভিযোগ চট্টগ্রামে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *