‘অবাঞ্চিত’ ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যে নিজ এলাকায় শমসের মবিন

জনপ্রতিনিধি পুরুষ প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি হ্যালোআড্ডা

সিলেট অফিস: ‘অবাঞ্চিত’ ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যে নিজ এলাকায় আসলেন বিএনপির সাবেক নেতা ও ‘তৃণমূল বিএনপি’র চেয়ারপার্সন শমসের মবিন চৌধুরী। তিনি রবিবার (২২ অক্টোবর) রাতে সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারের বিভিন্ন পূজামন্ডপ পরিদর্শন করতে আসেন। এর আগে ১৬ অক্টোবর গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছিলেন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। কিন্তু সে ঘোষণাকে ‘বৃদ্ধাঙ্গুলি’ দেখিয়ে নিজ এলাকায় এসেছেন তিনি।

দলীয় সূত্র জানায়, রবিবার রাতে গোলাপগঞ্জের ঢাকা দক্ষিণ এলাকার শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর মন্দিরে পূজামন্ডপ পরিদর্শন করে সনাতন ধর্মালম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় তাকে অভ্যর্থনা জানান পূজা উদযাপন পরিষদের সহসভাপতি বিষু ভূষন দেব, বিদ্যুৎ ভূষন দেব, যুগ্ম সম্পাদক উজ্জল দেব মিটু, সাধারণ সম্পাদক বিষলো ভট্টাচার্য বাবলু, সহ সাধারণ সম্পাদক গোপাল বর্ধন প্রমুখ।

পরিদর্শনকালে তাঁর সঙ্গে ছিলেন ‘তৃণমূল বিএনপি’র সিলেট জেলা শাখার আহবায়ক এম এ হান্নান, গোলাপগঞ্জ উপজেলা শাখার আহবায়ক সানাউল হক। এরপর তিনি ভাদেশ্বর খমিয়াপাতন পূজামন্ডপ ও বিয়ানীবাজারের কয়েকটি পূজামন্ডপ পরিদর্শন করেন।

এসময় শমসের মবিন বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সবসময় অসাম্প্রদায়িক। এদেশে কোন ভেদাভেদ নেই। জাতি ধর্ম বর্ণ কোন বিভাজন নেই। এদেশ হলো গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র্র। সকলের রয়েছে সমান অধিকার। এদেশ হলো সকল মানুষের দেশ। তিনি বলেন আমি নিজে একজন মুক্তিযোদ্ধা। অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৭১সালে দেশ স্বাধীন করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্বক আহত হয়েছি। জীবন বাজি রেখে এদেশ স্বাধীন করেছি।

শমসের মবিন চৌধুরীর বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জে। বিএনপিতে যোগদানের মধ্য দিয়ে তাঁর রাজনীতিতে অভিষেক ঘটে। নিজের মেধা ও যোগ্যতায় অল্পদিনের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হন। বর্তমানে তিনি ‘তৃণমূল বিএনপি’র চেয়ারপার্সন এর দায়িত্বে আছেন। মধ্যখানে কিছুদিন রাজনৈতিক দল ‘বিকল্পধারা’তে ছিলেন।

সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের এক টক-শোতে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী ফয়সল আহমদ চৌধুরীকে নিয়ে ‘মিথ্যা তথ্য’ ছাড়ানো ও তাঁর দল সম্পর্কে ‘কটূক্তি’ করার অভিযোগ উঠে শমসের মবিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত রয়েছে। গত ১৬ অক্টোবর বিকেলে গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারের বিএনপি নেতাকর্মীরা শমসের মবিন চৌধুরীর কুশপুত্তলিকা দাহ করেন এবং তাকে এই দুই উপজেলায় ‘অবাঞ্চিত ঘোষণা’ করেন।

সর্বশেষ গত শনিবার (২১ অক্টোবর) শমসের মবিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সিলেট জেলা বিএনপির জৈষ্ঠ্য সদস্য ফয়সল আহমদ চৌধুরী। লিখিত বক্তব্যে ফয়সল চৌধুরী বলেন- শমসের মবিন চৌধুরী এক সময় বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। কিন্তু দলের ক্রান্তিলগ্নে সরকারের দালালি করার উদ্দেশ্য নিয়ে রাজনীতি থেকে অবসর নেন এবং কিছুদিনের মধ্যেই তিনি বিকল্প ধারায় যোগদান করে গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারে সংসদ নির্বাচন করার খায়েস করেন। কিন্তু দলছুট বিশ্বাসঘাতক এহেন ব্যক্তিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করলে তার নমিনেশন বাজেয়াপ্ত হয়। কারণ তিনি সাকুল্যে ভোট পেয়েছিলেন ১৯১টি। এরপর তিনি দীর্ঘদিন ঘাপটি মেরে বসে থাকেন। এখন সরকারের ক্রীড়নক হয়ে কথিত একটি কিংস পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়ে আবারো সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবার খায়েস নিয়ে নানা কুটচাল ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তিনি দলছুট, নীতিহীন এবং পথভ্রষ্ট।

কাওছার আহমদ

আরো পড়ুন : রয়েল প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় আসরের ট্রফি উন্মোচন

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *