স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল থেকে : আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানোই ওদের কাজ। এদেশে ওদের রাজনীতি করার অধিকার নাই। গতকাল বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে এক বিশাল নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা ৭ই জানুয়ারি নির্বাচনে ভোট প্রার্থনা করে বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে একটি মানুষও হতদরিদ্র থাকবে না।
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নৌকা মার্কার সমর্থনে আয়োজিত মহাসমাবেশে বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলা থেকে লক্ষাধিক নেতাকর্মী অংশ নেয়। বিকাল ৪টায় শেখ হাসিনা তার ছোটো বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে মঞ্চে ওঠেন। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে স্বাধীনতা পরবর্তী তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামল উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন ক্ষমতায় বসেছিলেন, তখন বাংলাদেশ ছিল ক্ষুধা নিপীড়িত একটি দেশ, যেখানে মানুষের গড় আয় ছিল মাত্র ৯১ ডলার। ৩ বছর ৭ মাসের শাসনামলে বঙ্গবন্ধু সেই আয় ২৭৭ ডলারে উন্নীত করেন। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশে কোনো উন্নতি হয়নি, মানুষের ভাগ্যেরও কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ব্যতীত অন্য কোনো সরকার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারেনি।
যে মানুষগুলো আধবেলা খেতে পারতো না, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এখন মানুষ তিনবেলা খেতে পারছে। শেখ হাসিনা বলেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে বরিশালে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে। ভাঙ্গা থেকে পায়রা পর্যন্ত সড়কপথ ৬ লেনে উন্নীত করা হবে। ভোলার গ্যাস ভবিষ্যতে বরিশালে আনা হবে। তিনি সবাইকে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। বরিশাল বিভাগের নৌকা মার্কার প্রার্থীদের নাম উল্লেখ করে তিনি ভোট প্রার্থনা করেন।
মহাসমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা হবে। তবে কার সঙ্গে? বিএনপি ফাউল করেছে, লাল কার্ড পেয়ে মাঠ থেকে উঠে গেছে। কাদের বলেন, বিএনপি’র ১ দফা ভুয়া, বিএনপি’র আন্দোলন ভুয়া। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আমির হোসেন আমু, নৌকা মার্কা নেয়া জোটের নেতা রাশেদ খান মেনন, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সদ্য আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া শাহজাহান ওমর, আওয়ামী লীগ নেতা বাহাউদ্দিন নাছিম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, বরিশালের মেয়র সেরনিয়াবাত আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ, বরিশাল-৫ আসনের নৌকা প্রার্থী জাহিদ ফারুক, বরিশাল-৬ আসনের হাফিজ মল্লিক, আওয়ামী লীগ নেতা ড. শাম্মি প্রমুখ।
মহাসামবেশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যান জনসমুদ্রে পরিণত হয়। ৬টি জেলার ৪১টি উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা হাজির হন। ৫ বছর পর প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে নিñিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুরো নগরীতে সকাল থেকে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
আরো পড়ুন : ঈগল আর ট্রাকের দ্বিমুখী-ত্রিমুখী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি নৌকা