জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা বসছে আজ। গণভবনে ডাকা জরুরি এই বর্ধিত সভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি উপদেষ্টা পরিষদ ও সারা দেশের জেলা ও উপজেলা এবং পৌরসভা কমিটির শীর্ষ নেতাদের ডাকা হয়েছে। সভায় সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারাও অংশ নেবেন। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ডাকা সভাটিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এই সভায় নির্বাচন নিয়েই নেতাকর্মীদের চূড়ান্ত নির্দেশনা দেবেন বলে জানা গেছে। নেতারা জানিয়েছেন, নির্বাচনের পাশাপাশি বিরোধী দলগুলোর সম্ভাব্য আন্দোলনের বিষয়ে করণীয় নিয়েও আলোচনা হবে, দিকনির্দেশনা আসবে বৈঠক থেকে। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিষয়েও নির্দেশনা দেয়া হবে। দল যাকে মনোনয়ন দেবে পরিস্থিতি বিবেচনায় তার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করারও নির্দেশনা দেবেন দলীয় সভানেত্রী।
এ ছাড়া সভায় বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা তাদের নিজ নিজ বিভাগের সাংগঠনিক পরিস্থিতিও তুলে ধরতে পারেন। দলীয় সূত্রের দাবি, মূলত কেন্দ্রের বার্তা পৌঁছে দিতেই বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। এতে কেন্দ্রীয় নেতারা দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকটি শুরু হবে বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশেষ বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, জেলা, মহানগর ও উপজেলা, থানা ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকগণ, জাতীয় সংসদের দলীয় সদস্যবৃন্দ, জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের দলীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার দলীয় মেয়র এবং সহযোগী সংগঠনসমূহের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ উপস্থিত থাকবেন।
বৈঠকের বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিশেষ বর্ধিত সভা নিয়ে ইতিমধ্যে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
বর্ধিত সভায় মূলত দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, রাষ্ট্রীয় পরিস্থিতি বিশেষ করে আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়াও নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি দল দেশকে যে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে সে বিষয়েও আলোচনা হবে। নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা দেয়া হবে। যেন কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন রাষ্ট্রের কোনো ক্ষতি করতে না পারে, দেশের মানুষের জান-মালের ক্ষতি করে নির্বাচনকে বানচাল করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক করা হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য বলা হবে। কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সে জন্য সবাইকে কাজ করতে নির্দেশনা দেয়া হবে। এ ছাড়াও নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করতে দলীয় কৌশল নিয়েও আলোচনা হবে। এ বিষয়ে নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা দেবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বৈঠক আহ্বান করেছেন, তিনিই মূলত নেতাদের দিকনির্দেশনা দেবেন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি যে নির্দেশনা দেবেন নেতারা তা বাস্তবায়ন করবেন। আগামী নির্বাচনে নৌকাকে আবারো বিজয়ী করতে করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেয়ার জন্যই এই বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় কোন্দল নিরসনে আগেই নেতাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। এর আগের জাতীয় নির্বাচনে অনেকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছিলেন। কেন্দ্র থেকে কড়া বার্তা দিয়েও তাদের ঠেকানো যায়নি। দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সামনের নির্বাচনটি নানা কারণে চ্যালেঞ্জের হবে। এই নির্বাচনে যাতে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ প্রার্থী না হন বর্ধিত সভা থেকে এমন বার্তা দেয়া হবে। পাশাপাশি নির্বাচনে কী কী চ্যালেঞ্জ আসছে- চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয় কী- তার একটি দিকনির্দেশনা আসবে বৈঠক থেকে। এ ছাড়া বিরোধী দলগুলো এক দফা দাবিতে যে আন্দোলন করছে সামনের দিকে এই আন্দোলনের গতি- প্রকৃতি নজরে রেখে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ারও নির্দেশনা আসবে বৈঠক থেকে। দলীয় সূত্র জানায়, বিরোধী দলগুলো সামনে কর্মসূচি জোরদার করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে দলীয় কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার নির্দেশনাও আসবে বৈঠক থেকে।
আরো পড়ুন : মুন্সিগঞ্জে পিকনিকের ট্রলার ডুবে মৃত্যু বেড়ে ৮, নিখোঁজ ৫