ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তন আজ শনিবার। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে দুপুর ১২টায় হবে এই সমাবর্তন। এতে ৩০ হাজারের বেশি গ্র্যাজুয়েট ও গবেষক অংশ নেবেন। করোনা মহামারির কারণে প্রায় সাড়ে তিন বছর পর হচ্ছে এই সমাবর্তন।
সমাবর্তনের জন্য এরই মধ্যে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নিশ্চিত করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার নিরাপত্তা। সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে উত্সবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ। এবারের সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নোবেল বিজয়ী ফরাসি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক জ্যঁ তিরোল। তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টর অব ল’স (অনারিস কসা) ডিগ্রি প্রদান করা হবে।
ঢাবির ৫৩তম সমাবর্তন নিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তন উপলক্ষে নবীন গ্র্যাজুয়েট, অভিভাবক, শিক্ষকমণ্ডলীসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম বৃহত্ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৯২১ সালে মুক্তবুদ্ধি চর্চার প্রতিশ্রুতি নিয়ে এই বিদ্যাপীঠের যে অগ্রযাত্রা সূচিত হয়েছিল, নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজও সেই মূলধারা বিকাশমান রয়েছে।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে জাতির প্রত্যাশা অনেক। এবারের সমাবর্তনের মধ্য দিয়ে যাঁরা নতুন করে কর্মজীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন, তাঁদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, তোমরা দেশপ্রেম, মানবিক মূল্যবোধ ও সৃজনশীলতা দিয়ে নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে দেশের কল্যাণে কাজ করে যাবে। ’
সমাবর্তন উদযাপন উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁদের অর্জিত জ্ঞান, মেধা-মনন ও সৃজনশীলতা প্রয়োগ করে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিজ নিজ অবস্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অধিকতর উন্নত গবেষণার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভবিষ্যতে যেকোনো সংকট উত্তরণে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা-গবেষণা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তিসহ জ্ঞানের সব শাখায় এগিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে আশা করি, জ্ঞান ও আলোর পথের অভিযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নতুন দিগন্ত তৈরি করুক। ’
সমাবর্তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট ও উপাদানকল্প কলেজ/ইনস্টিটিউটের গ্র্যাজুয়েটরা সমাবর্তনের মূল ভেন্যু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ এবং অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের গ্র্যাজুয়েটরা ঢাকা কলেজ ও ইডেন কলেজ ভেন্যু থেকে সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করবেন।
সমাবর্তনে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও তার অধিভুক্ত কলেজগুলোর নিবন্ধন করা গ্র্যাজুয়েট ও গবেষকরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
সমাবর্তনে ৩০ হাজারের বেশি গ্র্যাজুয়েট ও গবেষক অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেছেন। এঁদের মধ্যে মোট ২২ হাজার ২৮৭ জন গ্র্যাজুয়েট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ভেন্যুতে এবং সাত হাজার ৭৯৬ জন ঢাকা কলেজ ও ইডেন কলেজ ভেন্যুতে সমাবর্তনে অংশ নেবেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ১৩১ জন কৃতী শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীকে ১৫৩টি স্বর্ণপদক, ৯৭ জনকে পিএইচডি, দুজনকে ডিবিএ এবং ৩৫ জনকে এমফিল ডিগ্রি প্রদান করা হবে।
আরো পড়ুন : কৃষি ও খাদ্য নিশ্চয়তা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষকের অধিকার আদায়ে মাঠে নেমেছে বিএনপি