ভোট লড়াইয়ে প্রস্তুত আওয়ামী লীগ। আজ বিকাল ৩টায় দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন দলীয় সভানেত্রী ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা। এ বৈঠক থেকে নিজের মনোনয়নপত্র সংগ্রহের মাধ্যমে দলের মনোনয়নপত্র বিক্রির উদ্বোধন করবেন তিনি। কাল থেকে শুরু হবে দলের মনোনয়নপত্র বিক্রি। চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত। এবার বিক্রির জন্য দলের ১০ হাজার মনোনয়ন ফরম ছাপানো হয়েছে। বুথ বসানো হবে ১০টি। প্রতিটি মনোনয়ন ফরমের মূল্য রাখা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা।
ইতোমধ্যে বিভাগভিত্তিক টিম গঠন করা হয়েছে। দলের তৃণমূল নেতারাও ভোট ঘিরে উৎসবের আমেজে মেতেছেন। বিএনপির হরতাল-অবরোধসহ নানা কর্মসূচি মোকাবিলা করেই ভয়কে জয় করতে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট করতে পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে আওয়ামী লীগে। জানা গেছে, দলের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে তৃণমূলের নেতারা এখন ঢাকামুখী। তারা দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করছেন। নিজেদের জীবনবৃত্তান্ত দিয়ে দোয়া চাইছেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডি কার্যালয় ও ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এখন সরগরম নেতা-কর্মীদের ভিড়ে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এসব কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের ভিড় লেগেই আছে। নির্বাচন ঘিরে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে। সংবিধান অনুযায়ী এর বিকল্প ছিল না। আর আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী দল। আমরা ভোটকে উৎসবমুখর করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছি।’ আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ভোটের প্রস্তুতির পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াত যেন দেশে হরতাল-অবরোধ দিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য পাড়া-মহল্লায় সতর্ক অবস্থানে থাকবে দলটি। যারা নাশকতা করবে তাদের প্রতিরোধ করা হবে বলেও কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ভোট উৎসব শুরু হয়েছে। তফসিলের দিন সারা দেশে প্রতিটি সাংগঠনিক ইউনিটিতে আনন্দ মিছিল করছে নেতা-কর্মীরা। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও সভানেত্রীর কার্যালয়ে লোকারণ্য। চারদিকে উৎসবমুখর পরিবেশ। এ উৎসবকে ধরে রেখেই আগামী ৭ জানুয়ারি আমরা ভোট উৎসব করব।’ জানা গেছে, এবার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের প্রক্রিয়া সহজ করতে অনলাইন এবং সরাসরি দুই ভাবেই মনোনয়নপত্র বিতরণ করবে আওয়ামী লীগ। প্রতিবারের মতো এবারও প্রত্যেক বিভাগের জন্য আলাদা আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব জায়গায় কারা দায়িত্ব পালন করবে তাদের ইতোমধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দেশের মানুষ নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে। টানা তিন মেয়াদে যে কাজগুলো এখনো চলমান, নির্বাচিত হয়ে এলে আমরা সেই কাজগুলো সমাপ্ত করব।’ আজ বিকাল ৩টায় বসবে আওয়ামী লীগের প্রথম নির্বাচনি পরিচালনা কমিটির প্রথম সভা। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলীয় সভানেত্রী ও নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা। সদস্য সচিব ওবায়দুল কাদের এ সভা পরিচালনা করবেন। দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান পদটি ফাঁকা রাখা হয়েছে। সর্বশেষ দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে কো-চেয়ারম্যান করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে। আজকের বৈঠকে কো-চেয়ারম্যানের বিষয়টি নিশ্চিত করা হতে পারে। এ ছাড়াও বিভিন্ন উপকমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হতে পারে। একই সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনায় যুক্ত নেতাদের বার্তা দেবেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা যে সংকল্প করেছি তা হলো- আগামী ৭ জানুয়ারি প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে বহুসংখ্যক ভোটারের উপস্থিত কর। নৌকাকে বিজয়ী করার মাধ্যমে গোটা পৃথিবীকে দেখিয়ে দিতে চাই, আওয়ামী লীগই সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল।’
আরো পড়ুন : প্রকাশ্যে যত কথাই বলুক ভিতরে ভিতরে ভোটের প্রস্তুতি জাতীয় পার্টির