যে কোনো খেলায় দর্শক একটা বড় ফ্যাক্টর। মাঠে খেলছে খেলোয়াড়েরা। আর গ্যালারি জুড়ে দর্শকের উৎসাহ ও উদ্দীপনা। আনন্দ ও বেদনা সব মিলিয়ে তৈরি হয় একটা চমৎকার আবহ। সুন্দর পরিবেশ ও আমেজ। দর্শক খেলার প্রাণ। আর যে খেলায় দর্শক থাকে না, সে খেলা যতই শ্বাসরুদ্ধকর হোক না কেন সেখানে সৃষ্টি হয় না প্রাণের স্পন্দন। গতকাল সোমবার সাগরিকার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের অবস্থাও ছিল নিষ্প্রাণ। ভর দুপুরে তামিম বাহিনী যখন ব্যাটিংয়ে নামে, জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের গ্যালারি ছিল তখন একেবারে ফাঁকা। বাংলাদেশ দলের কান্ডারি তামিম ইকবাল ও লিটন দাশের ব্যাট যখন ব্যাকফুটে তখন গ্যালারি স্বল্প সংখ্যক দর্শককে খরতাপের পাশাপাশি হতাশার তাপেও পুড়াচ্ছিল। মুশফিক ও সাকিবের মনোমুগ্ধকর ইনিংস দুটি ক্রমাগত বাড়তে থাকা দর্শক প্রাণভরে করলেন উপভোগ। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের ২৪৬ রানের পুঁজি অনেকটা সান্ত্বনা খুঁজে পান গ্যালারির দর্শক। পরবর্তী সময়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমের গ্যালারি অনেকটা পরিপূর্ণ হয়ে যায়। কিন্তু খেলার শেষ অবধি ফাঁকায় ছিল সাগরিকার পূর্ব প্রান্তের গ্যালারি।
ইংল্যান্ড-বাংলাদেশ ম্যাচে সাগরিকার গ্যালারি কেন এত ফাঁকা, সে ব্যাপারে চট্টগ্রাম নগরীর বেপজা কলেজের একদল ছাত্র ইত্তেফাককে জানান, যে কোনো ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে আসে তরুণরা। কিন্তু এখানে অর্থাৎ সাগরিকার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আসলে পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়। বিশেষ করে বাইরে হাফ লিটার পানি পাওয়া যায় ১৫ টাকায় আর জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে পানি বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
এছাড়াও অলংকার মোড় থেকে সাগরিকা জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে যেতে হয় পায়ে হেঁটে। আবার খেলা শেষে পাওয়া যায় না কোনো যানবাহন। এসব কারণে আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও খেলা দেখতে আসা সম্ভব হয় না। এ সকল বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় আনলে দর্শক সংখ্যা বেড়ে যেত। চট্টগ্রাম শহরের একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাইফুল আলম বাবু জানালেন, ঢাকার মিরপুরে আগের দুই ম্যাচে হার এবং অফিস আদালত খোলা থাকার কারণে তৃতীয় এবং শেষ ওানডে ম্যাচে দর্শক স্টেডিয়ামমুখী হয়নি। তবে আগামী বৃহস্পতিবার টি-২০ ম্যাচে দর্শকের সাড়া মিলবে।
খেলা শেষে নগরীর মাদারবাড়ী এলাকার হাসিবুল নামে এক তরুণ জানান, আগ্রহ থাকার কারণে খেলা দেখতে এসেছি। প্রথমে মনে হয়েছিল বাংলাদেশ দল হেরে যাবে। কিন্তু বেলা যতই গড়াচ্ছিল, বাংলাদেশ দলের জয়ের পাল্লা ততই ভারী হয়ে উঠছিল। শেষ পর্যন্ত দলের জয়টা মাঠেই বসে দেখলাম। এটাই আমার তৃপ্তি। মাঠে না আসা দর্শকের আফসোস থাকবে। ইংল্যান্ড দলের বেশ কিছু সমর্থক গ্যালারিতে বসে তাদের দল ইংল্যান্ডকে সমর্থন দিয়ে যান।
আরো পড়ুন : পবিত্র শবে বরাতে পটকা ও আতশবাজি বহন এবং ফোটানো নিষিদ্ধ