আম্পায়ারিং নিয়ে হারমানপ্রীত যা করেছেন বা বলেছেন তাতে তাঁর শাস্তি হওয়া দরকার

আন্তর্জাতিক খেলাধুলা নারী প্রচ্ছদ বিনোদন হ্যালোআড্ডা

ক্রীড়া প্রতিবেদক: আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পছন্দ না হলে ক্ষুব্ধ হতেই পারেন। কিন্তু ক্রিকেট মাঠে সেটা প্রকাশের ক্ষেত্রে সংযত হতে হয়। হারমানপ্রীত কৌর অবশ্য সেই সংযমের ধারেকাছেও ছিলেন না। মিরপুরে আজ বাংলাদেশ নারী দলের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী ওয়ানডেতে আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর ভারতীয় নারী দলের অধিনায়ক রাগে–ক্ষোভে ব্যাট দিয়ে স্টাম্প ভেঙেছেন। নিজের এমন আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ তো দুরের কথা, উল্টো পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আম্পায়ারিং নিয়ে। তা এমন ভাষায়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যেটিকে বিরলই বলা যায়। আম্পায়ারিং নিয়ে শুধু ক্ষোভের কথাই বলেননি, পরের বার বাংলাদেশ সফরে এলে এমন ‘প্যাথেটিক আম্পায়ারিং’য়ের মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তুতি নিয়েই আসবেন, বলেছেন এমনও।

হারমানপ্রীত আউট হয়েছেন ভারতীয় ইনিংসের ৩৪তম ওভারে। নাহিদা আক্তারের একটি বল সুইপ করার চেষ্টা করতে গিয়ে ব্যর্থ হন হারমানপ্রীত। বল তাঁর প্যাডে লাগে, সেখান থেকে যায় স্লিপের ফিল্ডার ফাহিমা খাতুনের হাতে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে সাড়া দিয়ে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার তানভীর আহমেদ। টেলিভিশন রিপ্লে দেখে অবশ্য বোঝা যায়নি বল হারমানপ্রীতের ব্যাটে বা গ্লাভসে লেগেছিল কি না। আর এই সিরিজে আল্ট্রা এজ প্রযুক্তি নেই। নেই ডিআরএসও। তবে খালি চোখে দেখে মনে হয়েছে ক্যাচ আউট না হলেও হারমানপ্রীত এলবিডব্লু হতেই পারতেন।

তবে আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দেওয়ার পরই খেপে যান হারমানপ্রীত। প্রথমে এক হাত দিয়ে অন্য হাতে থাকা ব্যাটে আঘাত করে জোরে আম্পায়ারের দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন বেশ কিছুক্ষণ। তারপর তো ব্যাট দিয়ে জোরে আঘাত করে স্টাম্পই উড়িয়ে দেন। মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় দর্শকদের দিকেও হাত দিয়ে কিছু একটা ইশারা করে দেখাচ্ছিলেন।

ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত টাই হয়েছে, সিরিজ হয়েছে ১-১ ড্র। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে হারমানপ্রীত আম্পায়ারিং নিয়ে নিজের সব ক্ষোভ আবার উগড়ে দেন মাইক্রোফোনের সামনে, ‘এই ম্যাচ থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারলাম। ক্রিকেট ছাড়াও যেরকম আম্পায়ারিং হলো, তাতে আমরা বিস্মিত। পরেরবার যখন আমরা বাংলাদেশে আসব, তখন নিশ্চিত করব যে আমাদের এরকম জঘন্য আম্পায়ারিংয়ের মধ্যে খেলতে হবে। সেভাবে প্রস্তুতিও নেব আমরা।’

বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের প্রশংসাও করেছেন ভারত অধিনায়ক, তবে সেটা করতে গিয়েও টেনে এনেছেন বাজে আম্পায়ারিংয়ের প্রসঙ্গ, ‘ওরা (বাংলাদেশ) ভালো ব্যাটিং করেছিল। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং করেছিল। ওরা সিঙ্গল নিচ্ছিল। যেগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা কিছু বাড়তি রান দিয়েছি। তারপরেও ম্যাচটা ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করছিলাম। কিন্তু একটু আগেই যেটা বললাম, জঘন্য আম্পায়ারিং হয়েছে। আম্পায়ারদের কয়েকটি সিদ্ধান্তে আমরা চূড়ান্ত হতাশ।’

এখানেই থামেননি হারমানপ্রীত। খেলা দেখতে মাঠে আসা ভারতীয় হাইকমিশনারকে কেন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ডাকা হলো না, সে নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, ‘ভালো ম্যাচ হয়েছে। অনেক কিছু শিখেছি আমরা। শেষে বলতে চাই, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারও এখানে আছেন। এখানেও (পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে) তাঁকে ডাকতে পারতেন। যাই হোক, ঠিক আছে। এখানে আসার জন্য ধন্যবাদ, স্যার।’

ম্যাচে বা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেই শেষ হয়নি হারমানপ্রীতের অখেলোয়াড়োচিত আচরণ, ট্রফি নিয়ে দুই দল ছবি তোলার সময়ও নাকি আপত্তিকর অনেক কথাই বলেছেন তিনি। সব মিলিয়ে হারমানপ্রীত কৌর যা করেছেন বা বলেছেন, তাতে তাঁর কোনো শাস্তি না হলে খুবই বিস্ময়কর হবে সেটি।

আরো পড়ুর: ভোলাহাটে ট্রাক সিএনজি মুখামুখি সংর্ঘষে নিহত-২ আহত-৩

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *