ছাড়পত্র না পাওয়ায় রকেট হামলায় বিধ্বস্ত হওয়ার নয় মাস পেরিয়ে গেলেও দেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়নি ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজ। জাহাজটির সার্বক্ষণিক খবর রাখছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। ফেরত আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সাধারণ বীমা করপোরেশন।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন জাহাজটি চলতি বছরের ২ মার্চ ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগর তীরের অলভিয়া বন্দরে নোঙর করা অবস্থায় রকেট হামলায় বিধ্বস্ত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান। আহত হন বেশ কয়েকজন। ঘটনার পর পরই জাহাজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা এবং নাবিকসহ সবাইকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। হামলার নয় মাস পেরিয়ে গেলেও জাহাজটি ফিরিয়ে আনা হবে নাকি সেখানেই সংস্কার করা হবে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়নি। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন জানিয়েছে জাহাজটি বর্তমানে বীমাকারী প্রতিষ্ঠান সাধারণ বীমা করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন গতকাল বলেন, জাহাজটি এখন বীমা কোম্পানির তত্ত্বাবধানে আছে। যুদ্ধ পরিস্থিতির উন্নতি হলে বীমাকারী সাধারণ বীমা করপোরেশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
সাধারণ বীমা করপোরেশন সূত্র জানায়, এমভি বাংলার সমৃদ্ধি অলভিয়া বন্দরেই সংস্কার করা হবে নাকি দেশে ফেরত আনা হবে সবকিছুই নির্ভর করছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের পর। যুদ্ধ না থামলে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না সংস্থাটি।
জানতে চাইলে সাধারণ বীমা করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক (পুনঃবীমা) ওয়াসিফুল হক বলেন, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন বীমা দাবির ২ কোটি ২৪ ডলার দাবি করেছে। যুদ্ধ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। আমরা জাহাজটি দ্রুত সরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। তিনি আরও বলেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে হামলার এক বছর হবে। এই সময়ের মধ্যে জাহাজটি ফেরত আনতে ব্যর্থ হলে মোট ক্ষতি হিসাব করে বীমা দাবির অর্থ প্রদান করা হবে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল বলেন, এমভি বাংলার সমৃদ্ধির বিষয়ে আমি সব সময় খোঁজখবর রাখছি। ঘটনার এক বছর পেরিয়ে গেলে বীমা দাবির শতভাগ ক্ষতিপূরণ পাবে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। জাহাজের সর্বশেষ খবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে জানানো হচ্ছে।
২০১৮ সালের নভেম্বরে চীন সরকারের সহায়তায় ৩৮ হাজার ৮৯৬ ডেড ওয়েট টন ধারণ ক্ষমতার বাল্ক ক্যারিয়ার এমভি বাংলার সমৃদ্ধি ছাড়াও আরও দুটি জাহাজ ক্রয় করে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
আরো পড়ুন : বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির মাশুল দিতে হচ্ছে গ্রাহককে, ভর্তুকির বোঝা টানছে সরকার