এক বছরের কম সময়ের মধ্যে ইসরাইলি হামলা গাজার ৪০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। গত বছরের ৭ অক্টোবরের পর থেকে ৩২০ দিন যাবৎ গাজায় নৃশংস হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। তেল আবিবের আকাশ ও স্থল হামলায় গাজা উপত্যকায় এ পর্যন্ত যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মধ্যে প্রায় ১৭ হাজার শিশু, যা উপত্যকাটির মোট শিশুর ২ দশমিক ৬ শতাংশ। দিনের হিসেবে ইসরাইলের হামলায় প্রতিদিন গড়ে ৫২ শিশু প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন গড়ে ৭২ জন নারী ও পুরুষকে হত্যা করেছে ইসরাইল। হামাস-ইসরাইল সংঘাত শুরুর পর এখনও ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে তারা বিভিন্ন ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে যাদের কোনো হদিস নেই তাদের পরিবারের কাছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
এতে বলা হয়, নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনের মোট ধারণক্ষমতা ১৯ হাজার ৫০০ জন। গাজায় যত মানুষ মারা গেছে তাতে ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেন দুইবার পরিপূর্ণ করা যাবে। যদি প্যারিসে ৪০ হাজার মানুষকে একে অপরের পাশে শক্তভাবে দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়, তাহলে প্রথম ব্যক্তি নটর-ডেমে এবং শেষ ব্যক্তিটি ভার্সাইতে থাকবে। লাইনটি দীর্ঘ হবে ২৪ কিলোমিটার।
যদি ৪০ হাজার মানুষ হাতে হাত রেখে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করে, তাহলে তারা পুরো ম্যানহাটন দ্বীপকে ঘিরে ফেলতে পারবে। মানবন্ধনের এই লাইন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হাঁটতে একজন ব্যক্তির গড়ে ঘণ্টায় ৫ কি.মি. বেগে হাঁটতে হবে। সময় লাগবে ১২ ঘণ্টা। ৫০ কিলোমিটার বেগে চলা একটি গাড়ির ওই লাইন অতিক্রম করতে পুরো ৭২ মিনিট সময় লেগে যাবে। গাজায় নিহত হওয়া মোট সংখ্যার ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ হচ্ছে নারী এবং ৩৩ শতাংশ শিশু। গত বছরের ৭ অক্টোবরের আগে গাজায় জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২০ লাখ যার অর্ধেকই শিশু। উপত্যকাটিতে যে পরিমাণ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে তা দিয়ে অন্তত ৫৫০টি শ্রেণীকক্ষ পূর্ণ করা সম্ভব ছিল। ইসরাইল গত ১০ মাসে কমপক্ষে ৫০০টি স্কুলকে লক্ষ্যবস্তু করে বোমা বর্ষণ করেছে এবং সেগুলো গুড়িয়ে দিয়েছে। ইসরাইলের দীর্ঘ এই হামলায় গাজার ফিলিস্তিনি শিশুরা হারিয়েছে সম্পূর্ণ একটি শিক্ষাবর্ষ। যাতে তাদের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়েছে।
অঅরো পড়ুন : বন্যায় এখন পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৬ লাখ মানুষ