ঐতিহাসিক এক টেলিফোন কল। এর একপাশে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। অন্যপাশে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি। হামাসের রকেট হামলার জবাবে ইসরাইলের বোমা হামলায় গাজা যখন জ্বলছে, তখন এই উত্তেজনা প্রশমনের উপায় নিয়ে ফোনে আলোচনা করলেন এই দু’নেতা। কয়েক বছর ধরে আঞ্চলিক এই দুই দেশের মধ্যে ছিল ঘোর শত্রুতা। সম্প্রতি তাদের সব মান-অভিমানকে ভুলিয়ে দিয়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠায় মধ্যস্থতা করেছে চীন। সেই সম্পর্ক এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠিতও হয়েছে। তারপর এই দু’নেতার এটাই প্রথম সরাসরি টেলিফোনে কথা বলা। এ জন্য একে ঐতিহাসিক টেলি কথোপকথন বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ।
উল্লেখ্য, হামাসকে সমর্থন বা মদত দেয়ার অভিযোগ আছে ইরানের বিরুদ্ধে।
কিন্তু ইরান সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। এরই মধ্যে ইরানের প্রেসিডেন্ট ৪৫ মিনিট ধরে কথা বলেন ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে। তাদের এই ফোনালাপের বিষয়ই ছিল ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ। এই যুদ্ধ নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক দশক ধরে চলমান সংকট ও উত্তেজনা প্রশমনে জরুরি ভিত্তিতে কূটনৈতিক উদ্যোগ নেয়ার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয় ফোনকলে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট রইসিই ফোন করেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে। তিনি ফোন ধরে এই সঙ্কটের একটি সমাধান খোঁজার জন্য সৌদি আরবের দ্ব্যর্থহীন প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। বলেন, চলমান উত্তেজনা বন্ধে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যোগাযোগ রাখছে সৌদি আরব। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক জনগণকে টার্গেট করার বিরুদ্ধে একসুরে নিন্দা জানান। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক আইনের মূলনীতিকে সমুন্নত রাখার গুরুত্ব জোর দিয়ে তুলে ধরেন।
এই ফোনালাপে গাজা উপত্যকায় মানবিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। সেখানকার অধিবাসীদের বিষয়ে ভয়াবহ পরিণতির বিষয় তুলে ধরা হয়। দুর্ভোগ ও সহিংসতা বন্ধে তাদের প্রতিশ্রুতির কথা জোরালোভাবে বলার পাশাপাশি দুই নেতাই ফিলিস্তিনি জনগণের কল্যাণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এই সংকটের একটি দ্রুত ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এর ধারাবাহিকতায় সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে সংলাপ সেই লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ।
আরো পড়ুন : সৌদি আরব ও রাশিয়া তেল উৎপাদন হ্রাসের ধারা চালিয়ে যাবে