ঈগলের ছোবলের আশংকায় নৌকা

জনপ্রতিনিধি জাতীয় তথ্য-প্রযুক্তি নির্বাচন প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি হ্যালোআড্ডা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন আসনে প্রার্থীদের ব্যাপক গণসংযোগ চলছে। সভা, সমাবেশ, মতবিনিময় এবং প্রচারপত্র বিলি করার মধ্য দিয়ে প্রার্থীরা ভোট প্রার্থনা করেন। এ সময় তারা নানা প্রতিশ্র“তি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করেন। তবে কোন কোন আসনে ঈগলের ছোবলের আশংকায় নৌকা। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর

চাঁদপুর-৫ আসনে নৌকার সঙ্গে ঈগলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই
চাঁদপুর-৫ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে চারবারের সাবেক এমপি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম তাঁর নির্বাচনি হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি উপজেলার উন্নয়ন প্রচার করছেন। নির্বাচনি প্রচারণায় উন্নয়নের আশ্বাস দিচ্ছেন তিনি। বিভিন্ন পথসভায় তিনি বলেন, স্বাধীনতার প্রতীক নৌকা, আওয়ামী লীগের কোনো নেতা-কর্মী ও সমর্থক নৌকার বাইরে ভোট দিতে পারে না। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনি প্রচারণাকালে লিফলেট বিতরণ ও পথসভায় নৌকার পক্ষে ভোট চাইছেন। তাঁরই প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মাইনুদ্দিন ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তিনি দাবি করেন, বিগত সংসদ নির্বাচনে বর্তমান এমপির প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে মেজর রফিকুল ইসলামকে বিজয়ী করিয়েছেন। পরবর্তীতে নির্বাচনে হাজীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও জনসাধারণের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেছেন এবং তাদের সমাধানও দিয়েছেন। এতে নির্বাচনি এলাকায় তাঁর ব্যাপক জনপ্রিয়তা সৃষ্টি হয়েছে। গাজী দিনরাত মাইকিং করে নির্বাচনি প্রচারণার পাশাপাশি বিভিন্ন জনসংযোগ, প্রচারপত্র বিলি ও পথসভা অব্যাহত রেখেছেন। সেই সঙ্গে ওয়ার্ডভিত্তিক নেতা-কর্মীদের নির্বাচনের দিন ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কাজ করছেন।

টাঙ্গাইল-৩ আসনে লড়াই হবে নৌকা আর ঈগলে
টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন পেশাজীবী নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. কামরুল হাসান খান। মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন বর্তমান এমপি আতাউর রহমান খান। তিনি এ আসনে প্রার্থী হননি। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তাঁর ছেলে এ আসনের দুবারের সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানা। তাঁর নির্বাচনি প্রতীক ঈগল। নির্বাচনে মোট ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডা. কামরুল হাসানের নৌকা প্রতীকের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী রানার ঈগল প্রতীকের মধ্যে। এ আসনে আওয়ামী লীগ, স্বতন্ত্র প্রার্থী, জাপা ও বিএনএম প্রার্থী ভোটের মাঠে প্রচারণায় থাকলেও প্রচার-প্রচারণায় নেই সাম্যবাদী দল ও এনপিপির প্রার্থী। পদবঞ্চিত উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশ স্বতন্ত্র প্রার্থী আমানুর রহমান খান রানার পক্ষে কাজ করছে। তাছাড়া খান পরিবারের কিছুটা আধিপত্যও রয়েছে। রানার নির্বাচন সমন্বয়কারী আনেহলা ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার শাহজাহান বলেন, নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা ইতোমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর করেছে এবং বিভিন্ন সময় হামলার ঘটনা ঘটাচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. কামরুল হাসান খান এ আসনে নতুন মুখ। উপজেলা আওয়ামী লীগ তাঁর পক্ষে কাজ করছে। তাঁর ভাই বিশিষ্ট নাট্যকার মামুনুর রশিদ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের তারকাদের নিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন।

সিলেট-৬ আসনে নৌকায় ঈগলের ছোবল
সিলেট-৬ আসনে গত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে দলের মনোনয়ন চেয়ে আসছিলেন কানাডা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সরওয়ার হোসেন। কিন্তু তিনবারই দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হন তিনি। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের ওপর আস্থা রেখে তাঁর হাতেই তুলে দেওয়া হয় নৌকা প্রতীক। এবার মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচনের ঘোষণা দেন সরওয়ার। পছন্দের প্রতীক হিসেবে নির্বাচন কমিশন থেকে বরাদ্দ পান ঈগল। ভোটের মাঠে ঈগলের ছোবলে বিপর্যস্ত হওয়ার অবস্থা নৌকার।

দলীয় মনোনয়ন না পেলে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার আভাস আগেভাগেই দিয়ে রেখেছিলেন সরওয়ার হোসেন। তাই দলীয় প্রার্থী হিসেবে নুরুল ইসলাম নাহিদের নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিতে দেরি করেননি। আর ঈগল প্রতীক নিয়ে মাঠে নেমেই বাজিমাত অবস্থা। যেখানেই যাচ্ছেন সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন তিনি। দলের প্রার্থী নুরুল ইসলাম নাহিদ দীর্ঘদিন ধরে এলাকার উন্নয়ন ও জনসাধারণের কাছ থেকে দূরে ছিলেন এমন অভিযোগ ছিল আসনটির সাধারণ মানুষের মধ্যে। করোনা ও বন্যার সময়ও তিনি এলাকায় তেমন যাননি বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে তাঁর আসনভুক্ত গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারের মানুষের মধ্যে ছিল ক্ষোভ। অন্যদিকে নির্বাচনি প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা ভোটারদের কাছে নিয়মিত তুলে ধরছেন এই জনপ্রতিনিধি।

আরো পড়ুন : ভোলাহাটে বই উৎসবে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ ও সভাপতি না থাকায় ক্ষোভ

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *