নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকার এবারের নির্বাচনেও ‘ভোট ডাকাতির উৎসব’ করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেছেন, অতীতের মতোই সারা দেশের জনগণকে বন্দি করে, গৃহছাড়া করে ভোট ডাকাতির উৎসব সফল করতে চায় সরকার। আজ থেকে বিএনপির ডাকে দুই দিনের হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে পালনের আহ্বান জানিয়েছেন রিজভী। গতকাল বিকালে অনলাইন প্ল্যাটফরম জুমে সংবাদ সম্মেলন করে রুহুল কবির রিজভী এ আহ্বান জানান। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো শেখ হাসিনা সরকার আবারও গায়ের জোরে একতরফা ভোটহীন আরও একটি পাতানো নির্বাচনের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন রুহুল কবির রিজভী। তার অভিযোগ, সরকার ভোট ডাকাতির পথ কণ্টকমুক্ত করতে জাতীয়তাবাদী শক্তিসহ বিরোধী দল ও বিরোধী মতে বিশ্বাসীদের নিশ্চিহ্ন করতে সব রাষ্ট্রযন্ত্রকে দিয়ে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ৩০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি বলেন, সারা দেশে চলছে ইতিহাসের জঘন্যতম ভয়াবহ মামলাবাজি ও আটক-বাণিজ্য। দেশের প্রতিটি থানা ও উপজেলার চিত্রপট অভিন্ন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গ্রেফতার-বাণিজ্যের কারণে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ছাড়া গ্রামগঞ্জ, মফস্বল, জনপদে কেউ থাকতে পারছেন না। রিজভী বলেন, জনগণ রাজপথে নেমেছে। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে সরকারের পতন হবে। বাংলাদেশে একতরফা কোনো নির্বাচন হবে না। জনগণ সর্বশক্তি দিয়ে তা প্রতিহত করবে। রিজভী অভিযোগ করেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে বিএনপির ৩৩০ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা হয়েছে ৭টি এবং তাতে আসামি করা হয়েছে ৯৭৫ জনকে। একই সময়ে আহত হয়েছেন বিএনপির ১২ জনের বেশি নেতা-কর্মী। রিজভীর অভিযোগ, ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির ১৩ হাজার ২১০ নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। এ সময়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ২৯৬টির অধিক মামলা হয়েছে। আহত ৪ হাজার ১৩৩ জনের বেশি নেতা-কর্মী। ১ সাংবাদিকসহ ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এ সময়ে। স্বীকারোক্তি নিয়ে ডিবিপ্রধানের বক্তব্য বানোয়াট : ‘গ্রেফতার বিএনপি নেতারা অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের দায় স্বীকার করেছেন’- ডিবি প্রধানের এমন বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত ২৮ অক্টোবরের নাশকতার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া বিএনপির শীর্ষ নেতাদের স্বীকারোক্তি নিয়ে ডিবি প্রধানের বক্তব্য সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারণ ২৮ অক্টোবরের পর নাশকতার যেসব ঘটনা ঘটেছে, তার সবটাতেই সরকারদলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জড়িত। রিজভী বলেন, আমরা গ্রেফতার বিএনপি নেতাদের আইনজীবীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, নেতারা ডিবি কার্যালয়ে এ ধরনের কোনো স্বীকারোক্তি দেননি।