এমপক্স/মাঙ্কিপক্স কী এবং এটি কীভাবে ছড়ায়?

জনদুর্ভোগ তথ্য-প্রযুক্তি প্রচ্ছদ স্বাস্থ্য কথা হ্যালোআড্ডা

করোনা মহামারির সমাপ্তি ঘটলেও এখনো তার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি অনেক দেশ। দরিদ্র অর্থনীতির দেশগুলো এ ক্ষেত্রে এখনো আগের জায়গায় ফিরতে লড়াই করছে। এরমধ্যে নতুন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে। এই ভাইরাস মাঙ্কিপক্স (এমপক্স) নামে পরিচিতি।

আফ্রিকান অঞ্চলে মাঙ্কিপক্স পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে। গত ১৪ আগস্ট এই ভাইরাসের সতর্কতায় জরুরি অবস্থা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থা।(ডব্লিওএইচও)। জানা গেছে, ইউরোপের দেশ সুইডেনেও এমপক্স ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়েছে।

দ্য আফ্রিকা সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশনের তথ্যমতে, চলতি বছরের শুরু থেকে জুলাই পর্যন্ত ১৪ হাজার ৫০০ মানুষ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছে। এ সময় অন্তত ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়। বুরুন্ডি, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকান, কেনিয়া এবং রুয়ান্ডাতেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে।

পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে, গতবছরের একই সময়ের তুলনায় এমপক্স ভাইরাসে আক্রান্তের হার বেড়েছে ১৬০ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার বেড়েছে ১৯ শতাংশ। ফলে ভাইরাসটির উচ্চ মৃত্যুহার নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে।

মাঙ্কিপক্স কী? : বাংলাদেশ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) মাঙ্কিপক্স নিয়ে গত বছর এক নির্দেশনা লিপিবদ্ধ করেছে তাদের ওয়েবসাইটে। সংস্থাটির উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেনের মাঙ্কিপক্স ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।

মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে অর্থোপক্স ভাইরাস এ জাতির ভাইরাসের মধ্যে রয়েছে গুটিবসন্ত ও কাউপক্স। এ জন্য মাঙ্কিপক্সের সাথে গুটিবসন্ত বা স্মলপক্সের মিল দেখা যায়। আবার মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের রয়েছে দু’টো ক্লেড বা উপজাতি। একটি হচ্ছে মধ্য আফ্রিকা ক্লেড-এ উপজাতির মাঙ্কিপক্সে মৃত্যুহার ১০% পর্যন্ত হতে পারে। আরেকটি হচ্ছে পশ্চিম আফ্রিকা ক্লেড-এ উপজাতির মাঙ্কিপক্সে মৃত্যু তেমন হয়নি।

মাঙ্কিপক্স একটি ভাইরাসজনিত প্রাণীজাত (জুনোটিক) রোগ। ১৯৫৮ সালে ডেনমার্কের একটি বিজ্ঞানাগারে এক বানরের দেহে সর্বপ্রথম এ রোগ শনাক্ত হয় বলে একে মাঙ্কিপক্স বলা হয়। এ নামটি বদল করে নতুন বৈজ্ঞানিক নাম দেওয়ার জন্য বিশ্বস্বাস্থ্যসংস্থা উদ্যোগ নিয়েছে। কারণ এ নাম থেকে মনে হতে পারে বানরই এ রোগের জন্য দায়ী, যা সঠিক নয়। এ রোগটির প্রাদুর্ভাব ১৯৭০ সাল থেকে প্রধানত মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার ১১টি দেশে দেখা যায়।

এ রোগ থেকে নিজেদেরকে নিরাপদ রাখার উপায়ঃ আক্রান্ত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে আসা থেকে বিরত থাকা। আক্রান্ত ব্যক্তি এবং সেবা প্রদানকারী উভয়ে মাস্ক ব্যবহার করা। সাবান পানি দিয়ে নিয়মিত হাত ধোয়া (৩০ সেকেন্ড ধরে। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত দ্রব্যাদি সাবান/ জীবাণুনাশক/ ডিটারজেন্ট দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা। আক্রান্ত জীবিত/মৃত বন্যপ্রাণী অথবা প্রাকৃতিক পোষক (যেমন ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, খরগোশ) থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকা।

তবে সাধারণত গৃহপালিত প্রাণী (যেমনঃ গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস, মুরগী, মহিষ) থেকে এ রোগ ছড়ায় না।

আরো পড়ুন : ‘আর যেন কেউ জিয়াউল হওয়ার সাহস না পায়’

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *