এমপি হওয়ার দৌড়ে হারলেও ফলাফলে চমক দেখালেন হিরো আলম

পুরুষ প্রচ্ছদ বিনোদন সফলতার গল্প

জিততে না পারলেও বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে চমক দেখিয়েছেন আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। গতকাল উপনির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী রেজাউল করিম তানসেনের কাছে ৮৩৪ ভোটে পরাজিত হয়েছেন তিনি। জানা গেছে, বগুড়া-৪ আসনের উপনির্বাচনে ১১২ কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফলে জয়ী মহাজোটের প্রার্থী রেজাউল করিম তানসেন পেয়েছেন ২০ হাজার ৪০৫ ভোট। আর একতারা প্রতীক নিয়ে হিরো আলম পেয়েছেন ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট।

ফলাফলের পর হিরো আলম ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আপনারা আশাহত হবেন না। আবারও ভোটের মাঠে নামব। জানা যায়, হিরো আলম বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। দুটি আসনেই পরাজিত হয়েছেন তিনি। এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসন থেকে সিংহ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি।

ইউটিউব থেকে তারকা বনে যাওয়া হিরো আলমের জীবনে ঘটেছে নানা বিপর্যয়। বারবার তিনি উঠে দাঁড়িয়েছেন। মনোবল আর দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে গিয়েছেন নিজের লক্ষ্যের দিকে। এখন তিনি অনেকের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভাব অনটনের সঙ্গে চলা হিরো আলম ছোট বেলায় একই গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের বাড়িতে আশ্রয় পান। সংসারে অভাব থাকলেও আবদুর রাজ্জাক তাকে আদর স্নেহ দিয়ে সন্তানের মতোই বড় করে তোলেন। হিরো আলম পরিবারের দায়িত্ব হাতে তুলে নেন সেই ছোট বেলাতেই। স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেই তাকে নামতে হয় জীবিকার তাগিদে। বেশ কিছু ব্যবসার পর শুরু করেন সিডি বিক্রি। সিডি যখন চলছিল না তখনই মাথায় আসে ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবসার।

নিজ গ্রাম বগুড়ার এরুলিয়া ইউনিয়নের এরুলিয়ায় শুরু করেন ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবসা। তখন তাকে এলাকায় সবাই ডিশ আলম নামেই ডাকতেন। ক্যাবল নেটওয়ার্কের ব্যবসায় কর্মসংস্থান হয় বেশ কিছু যুবকের। তখন তার প্রতি মাসে আয় ৩ লক্ষাধিক টাকা। আশরাফুল আলম থেকে হিরো আলম হয়ে উঠতে তাকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে। সিডি ব্যবসার ফাঁকে দেখতেন মডেলদের ভিডিও। সেই থেকে মাথায় ঢোকে মডেল হওয়ার। ২০০৮ সালে শুরু হয় তার যাত্রা। এ সময় করে ফেলেন গানের মডেলিং। কিছু গানের ভিডিও করে সেগুলো নিজের ক্যাবল চ্যানেলেই প্রচার করেন। গ্রামের মানুষও তাকে বাহবা দিত। এরপরে সেসব মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে সংসারে মনোযোগী হন। ২০০৯ সালে বিয়ে করেন পাশের গ্রামের সুমী নামের এক তরুণীকে। সুমী পড়েছেন এসএসসি পর্যন্ত। তাদের সংসারে পর পর আসে নতুন তিন অতিথি। পুত্র আবির এবং কন্যা আলো ও আঁখি। এরপর আবারও মডেলিংয়ে ঝুঁকে পড়েন হিরো আলম। ২০১৬ সালে হিরো আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় তোলেন। দেশের গণমাধ্যমে শিরোনাম হন। ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোচিত হন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমও তাকে নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হয়। হিরো আলমকে বাংলাদেশের বিনোদনজগতের তারকা বলে উল্লেখ করা হয়। এরপর থেকে হিরো আলম চলচ্চিত্রসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন।

আরো পড়ুন : ১৫ বছরে শুধু ঢাকা থেকে খালেক একাই চুরি করেছেন ১ হাজার মোটরসাইকেল

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *