এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রথম দিনে অনুপস্থিত ১৮ হাজার ৫৫৯ জন

জাতীয় তথ্য-প্রযুক্তি প্রচ্ছদ শিক্ষা হ্যালোআড্ডা

মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার প্রথম দিন ১৮ হাজার ৫৫৯ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। আর অসদুপায় অবলম্বন করায় বহিষ্কার হয়েছে ২৪ জন।

এছাড়া নিয়ম লঙ্ঘন করায় বহিষ্কার হয়েছেন ২ পরিদর্শক।
এসএসসি পরীক্ষায় সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডে প্রথমদিন বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষায় সারা দেশে অনুপস্থিত ছিল ৯ হাজার ৭৩১ জন পরীক্ষার্থী।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অনুপস্থিত ছিল ঢাকা বোর্ডে, কম সিলেট বোর্ডে। অসদুপায় অবলম্বন করায় ৬ শিক্ষার্থী বহিষ্কার হয়েছে। নিয়ম লঙ্ঘন করায় কুমিল্লা বোর্ডের একজন কক্ষ পরিদর্শককে বহিষ্কার করা হয়েছে। অন্যদিকে দাখিলে কুরআন মাজিদ ও তাজভিদ পরীক্ষায় অংশ নেয়নি ৭ হাজার ৬৬০ শিক্ষার্থী।

পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় ৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিলে (ভোকেশনাল) বাংলা-২ পরীক্ষায় প্রথমদিনে অনুপস্থিতির সংখ্যা ১ হাজার ১৬৮ জন। অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে এই বোর্ডে ১১ শিক্ষার্থী বহিষ্কার হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের ‘নিয়ন্ত্রণকক্ষ’ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এবার ঢাকা মহানগরীর ১২২টি পরীক্ষা কেন্দ্রে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে গঠিত কুইক রেসপন্স টিম প্রথম দিন এসব কেন্দ্রে শতাধিক পরীক্ষার্থীকে সহায়তা করেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, সাধারণ ৯ বোর্ডে পরীক্ষার্থী ১৪ লাখ ১৮ হাজার ২৯২ জন। এর মধ্যে ৯ হাজার ৭৩১ জন অনুপস্থিত ছিল। মোট পরীক্ষার্থীর হিসাবে সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডে অনুপস্থিতির হার শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি অনুপস্থিত ঢাকা বোর্ডে।

এ বোর্ডে ২ হাজার ৩৪৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। এছাড়া চট্টগ্রাম বোর্ডে ৮০৯ জন, রাজশাহীতে ১ হাজার ১৮১, বরিশালে ৬৮২, সিলেটে ৫৬৪, দিনাজপুরে ১ হাজার ৪৩, কুমিল্লায় ১ হাজার ৩৭০, ময়মনসিংহে ৬০৪ এবং যশোর বোর্ডে ১ হাজার ১৩৩ জন অনুপস্থিত ছিল। এতে মোট শিক্ষার্থীর হিসাবে অনুপস্থিতির হার শূন্য দশমিক শূন্য ৬৯ শতাংশ।

এছাড়া মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে সারা দেশে ৭১৮টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ২ লাখ ৪৮ হাজার ৪১৭ জন। তাদের মধ্যে ৭ হাজার ৬৬০ জন অনুপস্থিত ছিল। অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে বহিষ্কার হয়েছে সাতজন। মোট শিক্ষার্থীর হিসাবে অনুপস্থিতির হার ৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

অন্যদিকে, কারিগরি বোর্ডের অধীনে এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিলে (ভোকেশনাল) ৭০৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ২০৩ জন। এর মধ্যে ১ হাজার ১৬৮ জন অনুপস্থিত ছিল। এছাড়া কারিগরিতে বহিষ্কার হয়েছে ১১ জন। মোট পরীক্ষার্থীর হিসাবে অনুপস্থিতির হার ১ দশমিক ৭০ শতাংশ।

ডিএমপির সূত্র জানায়, এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে আবেগ, উৎকণ্ঠা ও দুশ্চিন্তা থাকে। রাজধানীতে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ তাদের দুশ্চিন্তা দূর করতে প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে নিরলসভাবে কাজ করেছে।

পরীক্ষার্থীরা ভুল করে অন্য কেন্দ্রে চলে গেলে অথবা পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে দেরি হলে তাদের দ্রুত সঠিক কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে ডিএমপির ৮টি ট্রাফিক বিভাগের ৩২টি কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে। প্রতিটি বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে পুলিশ কর্মকর্তারা এই টিমে কাজ করছেন। প্রথম দিনে রাজধানীতে ডিএমপির কুইক রেসপন্স টিম শতাধিক পরীক্ষার্থীকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছে। তাদের মধ্যে অনেকে ভুল করে অন্য কেন্দ্রে চলে গিয়েছিল, অনেকের কেন্দ্রে পৌঁছাতে দেরি হচ্ছিল। তাদের ডিএমপির কুইক রেসপন্স টিম বাইকে সঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্র পৌঁছে দেয়। এছাড়া কেন্দ্রভিত্তিক কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যরা পরীক্ষার্থীদের নিরাপদে রাস্তা পারাপারে সহযোগিতা করেছেন। বিভিন্ন রাস্তায় ডাইভারশন দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা করেছেন।

ডেমরা (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, রাজধানীর ডেমরায় পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী নানা সহায়তা দিয়েছে ডেমরা থানা পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম। ভুল করে অন্য কেন্দ্রে আসা পরীক্ষার্থীদের সঠিক কেন্দ্রে মোটরসাইকেল ও পুলিশের গাড়িতে দ্রুত পৌঁছে দেওয়া, পরীক্ষার্থীদের মাঝে কলম প্রদান, আসন খুঁজে না পাওয়া ছাত্রছাত্রীদের রোল অনুযায়ী দ্রুত আসন খুঁজে দেওয়া, ভয়ে কাতর ও আতঙ্কিত পরীক্ষার্থীদের সান্ত্বনা ও পানির বোতল প্রদানসহ নানা সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রের একটি কক্ষে আধা ঘণ্টা পর প্রশ্নপত্র দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। প্রশ্নপত্র বিতরণের ঘণ্টা শুনতে না পাওয়ায় এ ঘটনা ঘটে। প্রশ্নপত্র দেরিতে বিতরণের বিষয়টি দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের নজরে এলে পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত আধা ঘণ্টা সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়।

কিন্তু কয়েকজন পরীক্ষার্থী নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষার খাতা জমা দিয়ে হল থেকে বেরিয়ে যায়। তারা আধা ঘণ্টা সময় কম নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। এ ঘটনায় অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

আরো পড়ুন : ভাষার মাসে একুশের প্রস্তুতির মধ্যেই প্রকট হয় রাজবন্দিদের মুক্তির দাবি

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *