পাকিস্তানের লাহোর কর্পস কমান্ডার হাউস তথা জিন্নাহ হাউসে হামলার প্রধান সন্দেহভাজন খাদিজা শাহকে বুধবার সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে (এটিসি) হাজির করে দেশটির পুলিশ।মঙ্গলবার তাকে গ্রেফতারের পর মহিলা থানায় স্থানান্তর করা হয়।
মঙ্গলবার পাঞ্জাব পুলিশ তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে। তিনি নিজেকে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থক বলে দাবি করেছেন।
খাদিজার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্ত করে দেখার জন্য তাকে পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। ৩০ মে পর্যন্ত তিনি কারাগারে থাকবেন।
আদালতে যাওয়ার আগে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পুলিশের ভ্যানের জন্য অপেক্ষা করেন এই পাকিস্তানি ফ্যাশন ডিজাইনার। পরে আদালতে হাজির করার সময় কালো ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছিলেন তিনি।
আদালতে তোলার পর খাদিজা শাহর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্তের স্বার্থে তাকে কারাগারে রাখতে বিচারককে অনুরোধ করে পুলিশ। এ সময় খাদিজাকে তার স্বামীর সঙ্গে আদালতকক্ষে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়।
পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে খাদিজাকে ৩০ মে আদালতে হাজির করতে বলেন বিচারক।
পাকিস্তানের ফ্যাশন ডিজাইনার খাদিজা শাহ এখন দেশটিতে বেশ আলোচিত একটি নাম।
জিন্নাহ হাউসে হামলার অভিযোগে ‘প্রধান সন্দেহভাজন’ এ নারী পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের ঘোষণা দিয়েছিলেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অডিও বার্তায়।
খাদিজা সাবেক অর্থমন্ত্রী সালমান শাহের কন্যা। তার দাদা আসিফ জানজুয়া ছিলেন পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান।
তিনি একজন খ্যাতনামা ফ্যাশন ডিজাইনার। একইসঙ্গে তিনি পাকিস্তান এবং ব্রিটিশ নাগরিক। গত ৯ মে তিনি লাহোর কর্পস কমান্ডার হাউস- যা জিন্নাহ হাউস নামে পরিচিত সেখানে হামলায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত।
এ ঘটনায় পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার স্বামীকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে। এ সময় তিনি পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান।
পলাতক অবস্থায় তিনি এক ভিডিওবার্তায় জানিয়েছেন, আদালতে তিনি আত্মসমর্পন করবেন।একইসঙ্গে তিনি ব্রিটিশ হাইকমিশনে গিয়ে তার গ্রেফতার আড়ানোর চেষ্টা করেন।
এক লিখিত অভিযোগে ব্রিটিশ সরকারকে তিনি জানান, তিনি একজন পিটিআই সমর্থক হওয়ায় পুলিশ তাকে টার্গেট করেছে।
তার স্বামীকে সন্তানদের সামনে মারতে মারতে নিয়ে গেছে পুলিশ। আটক অবস্থাতায় তাকে মারধর করছে পুলিশ। এ অবস্থা থেকে তাকে উদ্ধারের আবেদ জানিয়েছেন খাদিজা।
১৬ মিনিটের বেশি দীর্ঘ অডিও বার্তায় খাদিজা স্বীকার করেছেন যে, তিনি একজন পিটিআই সমর্থক এবং লাহোর কর্পস কমান্ডার হাউসের বাইরে বিক্ষোভে তিনি অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু সহিংসতায় সম্পৃক্ত থাকা এবং লোকদের প্ররোচিত করাসহ কোনো অন্যায় কাজে তিনি জড়িত ছিলেন না।
নিজেকে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর একজন ‘সমর্থক’ বলে দাবি করে খাদিজা জানান, পার্টির চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর পাবলিক ও সামরিক স্থাপনা ভাংচুরের সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদের গ্রেফতার অভিযান শুরু করার পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।অবশেষে মঙ্গলবার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
আরো পড়ুন : ‘মুখ ফসকে’ প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি দিয়েছেন আবু সাঈদ