রাজবাড়ীতে ভালো ফলন হয়েছে টমেটোর। টমেটোর উৎপাদনে খুশি কৃষকও। কিন্তু কৃষকের হাত থেকে ভোক্তা পর্যায়ে যেতেই দাম হয়ে যাচ্ছে দ্বিগুণ। কৃষক, খুচরা বিক্রেতা ও ভোক্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এমন তথ্য। জেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, জেলায় এবার ৫১০ হেক্টর জমিতে ১৩ হাজার টন টমেটোর চাষ হয়েছে, যা তাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের উড়াকান্দা মাঠে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মার তীর ঘেঁষে শুধু সবজির আবাদ। কিষান-কিষানিরা আনন্দের সঙ্গে সবজি তুলে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছেন।
বরাট ইউনিয়নের উড়াকান্দা গ্রামের কৃষক গোলাপ শেখ জানান, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর বাজারে শীতকালীন সবজির দাম বেশি। তবে তারা সেই লাভের অংশ কখনও পান না। তিনি তাঁর ক্ষেত থেকে টমেটো তুলে ক্ষেতেই বিক্রি করেন প্রতিকেজি ২২ টাকা দরে। দুই হাত ঘুরে সেই টমেটো রাজবাড়ী বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। এ বছর দুই দফা চারা রোপণ করতে হয়েছে টমেটোর। সার ও ওষুধের দাম বেড়েছে। ক্ষেত থেকে টমেটো তুলে পরিষ্কার করতেও নারীশ্রমিকদের দিতে হয়েছে তিনশ টাকা করে। ফলে তাঁর মতো কৃষকরা খুব একটা লাভবান হতে পারেন না।
কৃষক সামাদ মিয়া জানান, ফলন ভালো হয়েছে। টমেটো ২০ টাকা কেজির নিচে বিক্রি করলে তাঁর লোকসান হবে।
রাজবাড়ীর তরকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন কোনো সবজির দাম খুব একটা কমেনি। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি।
খুচরা বিক্রেতা রবিউল ইসলাম, কিয়াম উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা টমেটো বিক্রি করছেন ৪০ টাকা কেজি দরে। কেউ পরিমাণে বেশি নিলে তাঁর কাছ থেকে কেজিপ্রতি একটু কম রাখা হয়।
জানা গেছে, খুচরা বিক্রেতারা আড়ত থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে টমেটো কিনে আনেন।
রাজবাড়ী শহরতলির দাদশী এলাকার বাসিন্দা সবজি ক্রেতা আরিফ মণ্ডল জানান, শীতকালে সবজির এমন দাম কখনও দেখেননি। এ সময়ে টমেটোর দাম ২০ টাকা কেজির মধ্যে থাকে।
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, বাজারে সবজির দাম একটু বেশি। কিন্তু কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়েছে অনেক। দাম যে অবস্থায় আছে এর থেকে কমে গেলে কৃষক লোকসানে পড়বেন বলে মনে করেন তিনি।
আরও পড়ুন : এমপি হয়েই পরিত্যক্ত খোয়াই নদী পরিষ্কারে নামলেন ব্যারিস্টার সুমন