ক্রিকেট গৌরবের ১৯৯৭, ২৬ বছর হয়ে গেল একটা গেট টুগেদার-ও হলোনা

আন্তর্জাতিক খেলাধুলা পুরুষ প্রচ্ছদ বিনোদন মুক্তমত হ্যালোআড্ডা

স্পোর্টস রিপোর্টার : ১৯৯৭ সালের ১৩ই এপ্রিল আইসিসি ট্রফির ফাইনালে কেনিয়াকে হারায় বাংলাদেশ। হ্যাঁ, ক্রিকেট পাগল একটা দেশ সেদিন রঙের উৎসবে মেতে উঠেছিল। আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বিশ্বে এখন টাইগার ক্রিকেটের গর্জন। আকরাম খানের নেতৃত্বে ওই ট্রফি জয়ই বাংলাদেশ ক্রিকেটের সোনালী দুয়ার খুলে দিয়েছিল। যে জয় বাংলাদেশ ক্রিকেটকে গতি দিয়েছে। পথ দেখিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটে এগিয়ে যাওয়ার। তা নিয়ে অবশ্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) তেমন কোনো আয়োজন নেই। এ নিয়ে আকরাম খানের কণ্ঠে ঝরে দারুণ আক্ষেপ। তিনি বলেন, ‘দেখেন আজকে ২৬ বছর হয়ে গেল।

একটা গেট টুগেদার করা উচিত ছিল। ক্রিকেট বোর্ড বলেন, কোয়াব বলেন। করা উচিত ছিল। এখানে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। আপনি যদি, আপনার পরের প্রজন্মের কাছে তুলে না ধরেন, তাহলে আপনার জিনিসটা তো মানুষের মনে থাকবে না।’ আকরাম খান মনে করেন বিসিবি’র এই ইতিহাস নিয়ে কাজ করা উচিত। তিনি বলেন, ‘আমি যেহেতু বোর্ডের সঙ্গে ইনভল্‌ভ, এটা বলা ভালো দেখায় না। মনে করেন যে, এটা কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাস। কারণ শুরু কিন্তু এখান থেকেই হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকেই ক্রিকেটের সঙ্গে ছিলেন, আছেন, এটা কিন্তু, বোর্ডের ধরে রাখার একটা দায়িত্ব। এটা করা উচিত। দেখেন আজকে ২৬ বছর হয়ে গেল আইসিসি’র। একটা গেট টুগেদার করা উচিত ছিল। ক্রিকেট বোর্ড বলেন, কোয়াব বলেন। করা উচিত ছিল। এখানে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। আপনি যদি, আপনার নেক্সট জেনারেশনকে তুলে না ধরেন, তাহলে আপনার জিনিসটা তো মানুষের মনে থাকবে না। সো এই জিনিসটাকে অনেক বেশি কনসেনট্রেশন করা উচিত। আজকের ক্রিকেটটা এই পর্যায়ে আছে, এর আগে কোন অবস্থায় ছিলাম। আজকে আমাদের ৮টা মাঠ আছে, ২৫ বছর আগে একটা মাঠও ছিল না। আজকে আমাদের এতো ইন্ডোর আছে, একাডেমি আছে। ক্যাম্প করছি, মাঠ আছে, আমাদের জানানো উচিত। আকরাম খানদের জ্বালানো সেই মশাল এখন তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসানদের হাত হয়ে তাসকিন আহমেদ, লিটন দাসদের হাতে। শুধু তাই নয়, এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটে অর্থের ঝনঝনানি। দেশের সব অঙ্গন মিলিয়েই বড় তারকা মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব, মুশফিকরা। আইসিসি ট্রফি জয়ী অধিনায়ক আকরাম মনে করেন, সাকিব-তামিমরা তারকা হতে পেরেছেন ওই জয়ের কারণেই। আকরাম বলেন, ‘আজকে তো প্রায় ২৬ বছর হয়ে গেল, আইসিসি ট্রফিটা। এত বড় বড় অ্যাচিভমেন্ট, এতো বড় বড় খেলোয়াড় খেলছে সাকিব, তামিম, মুশফিক; তারপর মাশরাফি যখন খেলত, আশরাফুল ছিল, তাসকিন, মোস্তাফিজ, খুবই ভালো লাগে। আমরা যদি আইসিসি ট্রফিতে কোয়ালিফাই না করতাম তাহলে হয়তো এরা খেলতো না। এই পর্যায়ে এরা পারফর্ম করতে পারতো না। তো সেটার জন্য আমাদের খুবই ভালো লাগে।’ ২৬ বছরে বদলে গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটও। শুধু প্রতিভাবান ক্রিকেটারই আসেনি দেশের ক্রিকেট অবকাঠামোরও এসেছে বড় পরিবর্তন। হয়েছে নতুন নতুন ক্রিকেট মাঠ, বেড়েছে একাডেমিসহ ক্রিকেটের নানা সুযোগ সুবিধা। এ নিয়ে আকরাম খান বলেন, ‘সেখান থেকে আজকের ক্রিকেটটা যে জায়গায় চলে আসছে, এতোগুলো মাঠ, এতোগুলো ইনডোর, এতোগুলো ফ্যাসিলিটিজ, এতো ভালো ভালো প্লেয়ার, বড় বড় দলকে আমরা হারাচ্ছি। সবকিছু মিলিয়ে আল্লাহ্‌র কাছে আবার শুকরিয়া আদায় করি। তখন আমাদেরকে খেলার সুযোগ দিয়েছে, আমরা খেলেছি। বাংলাদেশের এতো দূর আসার পেছনে অবদান আছে। সবারই আছে, আইসিসি’রও একটা ভালো রোল আছে। এজন্য গর্বিত মনে হয়।’ মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের কিলাত কেলাব মাঠে রুদ্ধশ্বাস ওই ম্যাচের শেষ বলে প্রয়োজন ছিল এক রান। প্যাডে লাগিয়ে এক ভৌ দৌড়ে জয় পায় টাইগাররা। এর আগে অবশ্য বাধা হয়েছিল বৃষ্টিও। তখন ওখানকার সব বাঙালি মিলে শুরু করেন মাঠ শুকানো। ২৬ বছর আগে ফিরে গেছেন ট্রফি জয়ী অধিনায়ক আকরাম। সেই দিনের স্মৃতির কথা মনে করে তিনি বলেন, ‘ওখানে গিয়ে যখন বৃষ্টি হলো, একটা সময় দিয়েছিল। ওই সময়ের মধ্যে যদি মাঠ উপযুক্ত হয়, তাহলে খেলা হবে না হলে হবে না। না হলে তো আমরা কোয়ালিফাই করছি না। তখন আমি দেখেছি, আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা, আমরা একটা এক্সট্রা টাওয়েল নিয়ে যেতাম, ২০-২৫ টা টাওয়েল নিয়ে সাংবাদিক ভাইয়ের সঙ্গে প্রচুর বাংলাদেশি ছিল। ওরা সবাই মিলে মাঠ থেকে টাওয়েল দিয়ে মাঠ শুকিয়েছিল। তারপরে ম্যাচটা হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে ম্যাচটা আমাদের জন্য জরুরি ছিল। ম্যাচটা জিতে আমরা কোয়ালিফাই করেছি।’

আরো পড়ুন : ভোটের সময় সংবাদ সংগ্রহে সাংবাদিক নীতিমালা প্রয়োজনে সংশোধন হবে

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *