খালেদা জিয়াকে সুস্থ করতে হলে তাঁর লিভার প্রতিস্থাপনের কোনো বিকল্প নেই

ওকে নিউজ স্পেশাল জনপ্রতিনিধি নারী প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি স্বাস্থ্য কথা হ্যালোআড্ডা

নিজস্ব প্রতিবেদক : কেমন আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া? প্রায় চার মাস ধরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল। বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদরোগসহ বেশ কিছু জটিল রোগে ভুগছেন। তার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণের পাশাপাশি তিনি লিভার সিরোসিসেও আক্রান্ত। চিকিৎসকরা বলেছেন, বেগম জিয়াকে সুস্থ করতে হলে তাঁর লিভার প্রতিস্থাপনের কোনো বিকল্প নেই। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে বারবার তাগিদ দেওয়া হয়েছে তাঁকে বিদেশের কোনো ‘মাল্টি ডিসিপ্লিনারি ডেভেলপমেন্ট হেলথ সেন্টারে’ নেওয়ার জন্য।

৭৮ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া সর্বশেষ গত ৯ আগস্ট এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার তাঁকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। জানা গেছে, সর্বশেষ হাসপাতালে আসার পর তাঁর পরিপাকতন্ত্রের রক্তক্ষরণ বন্ধ করা যাচ্ছিল না। গত ২৬ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাঁর দেহে বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি (টিপস প্রসিডিওর) সম্পন্ন করেন। এর ফলে লিভার সিরোসিসজনিত জটিলতা কিছুটা উপশম হয়। এখন তাঁর পরিপাকতন্ত্রের রক্তক্ষরণ সাময়িকভাবে বন্ধ আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

উল্লেখ্য যে, গত বছরের জুনে বেগম জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তাঁর হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। তখন একটি রিং পরানো হয়। মেডিকেল বোর্ডের কয়েকজন সদস্য চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেগম খালেদা জিয়ার রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসসহ স্বাস্থ্যের বিভিন্ন প্যারামিটারের উন্নতি হয়েছে। দু-এক দিন পরপর বিভিন্ন রকমের টেস্ট করা হচ্ছে। বোর্ডের চিকিৎসকরা সেগুলোর রিপোর্ট দেখে অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন ওষুধপত্রে পরিবর্তন আনেন। তারা জানান, বিএনপি প্রধান এখন টুকটাক কথাবার্তাও বলতে পারছেন চিকিৎসকদের সঙ্গে। মাঝেমধ্যে পত্রিকা পড়তে চান। জানতে চান দেশের অবস্থা। কিন্তু শারীরিক ও মানসিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে চিকিৎসকরা তাঁকে তেমন কোনো কিছু জানতে দেন না। রাজনীতির খারাপ কোনো খবর তো নয়ই। যেদিন শরীর একটু ভালো লাগে সেদিন খালেদা জিয়া তাঁর ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও রাজনৈতিক কথাবার্তা বলার চেষ্টা করেন। এমনকি চিকিৎসকদের পরিবারের খোঁজ-খবরও জিজ্ঞাসা করেন। প্রায় প্রতিদিনই লন্ডন থেকে পুত্রবধূ ডা. জোবায়দা রহমান ফোন করে কথা বলেন। বিশেষ করে তাঁর শারীরিক অবস্থার নিয়মিত খোঁজ-খবর নেন। বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডামের অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা স্থিতিশীল। মেডিকেল বোর্ড এটা ধরে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওনার এ অবস্থার মধ্যে যতটা সম্ভব রাজনৈতিক কথাবার্তা থেকে দূরে রাখাই মঙ্গল। লিভারের চিকিৎসা সম্পর্কে তিনি বলেন, লিভারের সমস্যা দিন দিন জটিল হচ্ছে। এটার শতভাগ চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। এ জন্য তাঁর লিভার ট্রান্সপ্লান্টের কোনো বিকল্প নেই। মেডিকেল বোর্ড সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রাখতে। কিন্তু একাধিক জটিলতা থাকায় সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ জন্য তাঁকে বারবার বিদেশে ‘মাল্টি ডিসিপ্লিনারি ডেভেলপমেন্ট হেলথ সেন্টারে’ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর পরিচর্যার জন্য হাসপাতালে অবস্থান করছেন তাঁর ছোট পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান। তিনি কয়েক মাস আগে লন্ডন থেকে ঢাকায় আসেন। নাতনি জাফিয়া রহমান কয়েক দিন আগে লন্ডন ফিরে গেছেন। ব্যক্তিগত সেবার জন্য সার্বক্ষণিক হাসপাতালে আছেন তার গৃহকর্মী ফাতেমা।

আরো পড়ুন : উপজেলা বিএনপির সভাপতি বন্দুক হাতে শাহজাহান ওমরের সমাবেশে

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *