খুলনা প্রতিনিধি: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আমেজ শেষ না হতেই খুলনায় উপজেলা নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। জেলার ৯টি উপজেলার গ্রামীণ হাটবাজারে চায়ের আড্ডায় চলছে নির্বাচনি আলাপচারিতা। সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিভিন্নভাবে নিজেদের প্রার্থিতার কথা জানান দিচ্ছেন। একই সঙ্গে চলছে প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে হেনস্তা করার কৌশলও।
জানা যায়, আগামী মে মাসে চার ধাপে উপজেলা ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আগামী মাসেই তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে দৌড়ঝাঁপের পাশাপাশি দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে লবিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তৎপরতা সবচেয়ে বেশি সম্ভাব্য প্রার্থীদের। একই সঙ্গে শুভেচ্ছা জানিয়ে টানানো ব্যানার, পোস্টার, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে গণসংযোগ চালাচ্ছেন অনেকেই।
জানা যায়, খুলনায় সর্বশেষ উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়। দলের একাধিক নেতা প্রার্থী হওয়ায় তৃণমূলে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ নেয়। তবে এবার দলীয় প্রতীক না থাকায় উৎসাহী প্রার্থীর সংখ্যা তুলনামূলক বাড়ছে। জানা যায়, খুলনার দিঘলিয়ায় উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুরনোদের পাশাপাশি নতুন প্রার্থীদের তৎপরতাও বেড়েছে। তবে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
দিঘলিয়ায় চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন- বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মারুফুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মল্লিক মহিউদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন, সাবেক গাজীরহাট ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী হেলাল, সাবেক দিঘলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা ফিরোজ হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেন। বিএনপি ঘরানার গাজী এনামুল হাসান মাসুম, সাবেক উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান শরীফ মোজাম্মেল হোসেনও প্রার্থী হতে পারেন। ২০১৯ সালে দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খান নজরুল ইসলাম। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শেখ মারুফুল ইসলাম খান তাকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এদিকে ফুলতলা উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন পদত্যাগ করে সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনি খুলনা-৫ আসনে সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দের কাছে পরাজিত হন। এবারের উপজেলা নির্বাচনে তিনি আবারও প্রার্থী হতে পারেন। আকরাম হোসেন একই সঙ্গে ফুলতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৯ সালের নির্বাচনে ডুমুরিয়া উপজেলায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোস্তফা সরোয়ারকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন বিদ্রোহী প্রার্থী এজাজ আহমেদ। এবারও দুজনেই নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন বলে জানা গেছে।
পাইকগাছা উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যানসহ মাঠে রয়েছেন বিভিন্ন দলের নবীন-প্রবীণ মিলে বেশ কজন নেতা। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান বলেন, সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলায়ও অংশ নেবে না বিএনপি। ফলে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ নেই। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারী জানান, আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী দল। দলের ঐক্য ধরে রেখে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনে আগ্রহী তৃণমূল।
আরো পড়ুন : জুয়ায় ঋণগ্রস্ত বাবা ‘বিক্রি’ করলেন একদিনের সন্তান