গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধায় যৌতুকলোভী পাষান্ড স্বামীর আঘাতে ভাঙ্গা হাত নিয়ে গাজীপুর থেকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি অসহায় স্ত্রী ফাহিমা। পাষান্ড স্বামী সুজন সরকার দরবস্ত ইউপির চকবিরাহিম গ্রামের মৃত হারুন মিয়ার ছেলে এবং গাজীপুরের চক্রবর্তী এলাকার একটি কোম্পানিতে কর্মরত।
গত ১০ জানুয়ারি দুপুরে গাজীপুরের চক্রবর্তী (মাটির মসজিদ) এলাকায় ভাড়া বাসায় বেদম মারপিটে স্ত্রীর ডান হাত ভেঙ্গে গেলে পালায় সুজন। বাসার মালিক জাকারিয়া অসহায় ফাহিমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গোবিন্দগঞ্জ পাঠায়। পরদিন ১১ জানুয়ারি সে গোবিন্দগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন। আহত ফাহিমা উপজেলার তালুককানুপুর ইউপির সমসপাড়া গ্রামের হযরত আলীর কন্যা।
জানা যায়, পারিবারিকভাবে ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর বিয়ে হয় ফাহিমা-সুজন দম্পত্তির। বিয়ের পর থেকে প্রায়ই ২ লাখ টাকা যৌতুকের দাবি করে শারীরিক নির্যাতন করত স্বামী। এক পর্যায়ে টাকা আনার জন্য গত ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি স্ত্রী ও একমাত্র কন্যাশিশুকে বাবার বাড়িতে পাঠায়। চাকরির সুবাদে দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অবস্থানের পর গত ২০২০ সালের ২৬ মে ঈদের দাওয়াত খেতে শ্বশুরবাড়ি যায় সুজন। সেখানে আবারও যৌতুকের টাকা প্রসঙ্গে স্ত্রীকে মারপিটে করে পালায়। পরবর্তীতে একতরফা তালাক হওয়ায় আদালতে আশ্রয় নিতে মামলা নম্বর ২৫১/২০২০ দায়ের হয়। মামলা থেকে কৌশলে বাঁচতে চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি পলাশবাড়ী রায়গ্রামের জনৈক কাজীর কাছে লোক দেখানো রেজিস্ট্রি করে স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে গাজীপুর ভাড়া বাসায় ওঠেন পাষান্ড সুজন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্ত্রী ফাহিমা জানান, যৌতুকলোভী সুজন ২০২০ সালের মোহররানা ও ভরণপোষণের জন্য করা চলমান মামলা ২৫১ থেকে বাঁচতে আমাকে আবারও বিয়ে করে ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে গিয়েও যৌতুকের টাকা দাবি করে আমাকে মারপিট করে হাত ভেঙ্গে দেয়। আমি চার বছর বয়সী শিশু কন্যাকে নিয়ে বাবার সহায়তায় চিকিৎসা নিচ্ছি। গাজীপুরে আমার হাত ভেঙ্গে দেওয়ার পর থেকে সে আর আমার কোন খোঁজ-খবর নিচ্ছে না। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ ঘটনায় স্বামী সুজন সরকারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা কর তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ফারুক হোসেন
গাইবান্ধা।
আরো পড়ুন : বিরামপুরে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক অবহিতকরণ কর্মসূচির সেমিনার অনুষ্ঠিত