গাজীপুর প্রতিনিধি: মাদকের আসামিকে মামলায় সুবিধা দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে ঘুস নেওয়ার অভিযোগে গাজীপুর মহানগরের পূবাইল মেট্রোপলিটন থানার পুলিশ কনস্টেবল ও এএসআইকে প্রত্যাহার করে জিএমপি হেড কোয়ার্টারে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, রোববার ভোররাতে নগরীর ৩৯নং ওয়ার্ডের হায়দরাবাদ পশ্চিমপাড়া থেকে জিপো রহমান রিপন (২৯) নামে একজনসহ চার যুবককে ১১ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করে থানায় নিয়ে যান পুলিশের এএসআই গোলাম সারোয়ার। তিনজনকে প্রসিকিউশন মামলায় ও রিপনকে ১১ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয় সোমবার। এর মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল আকরাম ও এএসআই গোলাম সারোয়ারের বিরুদ্ধে ৯৫ হাজার টাকা ঘুস নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের (জিএমপি) গাছা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাকসুদুর রহমান তদন্ত করে ওই দুজনকে প্রত্যাহার করেন। বৃহস্পতিবার বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি।
গ্রেফতার রিপন নাটোর জেলার নলডাঙ্গা থানার ব্রহ্মপুর গ্রামের সাজু প্রামাণিকের ছেলে। অন্য তিনজনের পরিচয় মেলেনি। রিপন পূবাইল ৩৯নং ওয়ার্ডের হায়দরাবাদ পশ্চিমপাড়ার মুন্নির বাড়ির ভাড়াটিয়া।
স্থানীয় যুবক রাসেল জানান, থানার প্রাচীরের ভেতরেই রিপনকে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে তার স্ত্রী নাজমা ও বাড়ির মালিক মুন্নির সামনেই ৪৫ হাজার টাকা গুনে দেই আকরামের হাতে।
ঘটনাস্থলে গেলে রিপনের স্ত্রী নাজমা জানান, শনিবার রিপন নাটোর থেকে ছোট ভাইকে বিদেশ পাঠানোর জন্য তার মায়ের দেওয়া ৫০ হাজার টাকা নিয়ে পূবাইলের হায়দরাবাদ আসছিল; কিন্তু যানজটের জন্য রাত গভীর হয়ে যায়। ফলে ঘুমিয়ে পড়ি। ঘুম থেকে উঠে রিপনের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। রোববার দুপুরে রিপনের মোবাইল থেকে স্ত্রী নাজমাকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে থানায় যেতে বলে রিপন। ওই রাতেই বাপের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা থেকে ব্যবহৃত স্বর্ণালংকার বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা জোগাড় করি। পরে বাড়ির মালিক মুন্নিসহ রাত ৯টার দিকে পূবাইল থানায় গিয়ে কনস্টেবল আকরামের সঙ্গে দেখা করে ৪৫ হাজার টাকা গুনে দিলে তিনি থানার লকআপে নাজমার স্বামীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ করে দিয়ে চলে যান।
পূবাইল থানার কনস্টেবল আকরামের কাছে ৪৫ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
পূবাইল থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, টাকা লেনদেনের বিষয়টি আমার জানা নেই। এএসআই গোলাম সারোয়ারের মোবাইলে কয়েকবার যোগাযোগ করলেও ফোন রিসিভ করেননি তিনি।
সোমবার সকালে পূবাইল থানার ওসি শফিকুল ইসলামের সঙ্গে নাজমা দেখা করলে টাকা নেওয়ার কথা জানেন না বলে জানান। তবে নাজমাকে পাঁচ হাজার টাকা হাত খরচ হিসেবে দিয়ে বিদায় দেন।
অঅরো পড়ুন : জিনিসের মূল্য কৃত্রিম উপায়ে মূল্য বাড়ানো হয়