রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি: নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মহিষভেড় এলাকায় নদী ভাঙনে ফসলি জমি, বাড়িঘর ও গবাদি পশু মেঘনায় ভেসে গেছে। গত শনিবার রাত থেকে ওই গ্রামের দুই কিলোমিটার অংশে মেঘনার ভাঙন শুরু হয়। এ ঘটনায় নদীপারের দুই হাজার বাসিন্দার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সাফিয়া বেগম নামে এক বৃদ্ধা বলেন, রাতে হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভাঙে।
উঠে দেখি ঘরের এক পাশ দেবে যাচ্ছে। পরে দ্রুত এক নাতিসহ স্বামী-স্ত্রী ঘর থেকে বের হই। ওই সময় চোখের পলকে ঘরটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। পাশের গোয়ালঘরসহ দুটি গাভিও নদীতে ভেসে গেছে। সহায় সম্বল হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে নদীর পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতের কারণে চরসুবুদ্ধি ইউনিয়নের মেঘনাপারের মহিষভেড় গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গ্রামটির দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই ভাঙন শুরু হয়েছে। শনিবার রাতে ছয় থেকে সাত বিঘা জমিসহ তিনটি ঘর বিলীন হয়ে গেছে। গত আট বছরের গ্রামটির দেড়শ পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে আজ সোমবার দুপুরে দেখা গেছে, ভাঙনের শিকার সাফিয়ার পরিবার খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। ওই সময় তার ছেলের টিনের ঘরটি ভাঙন থেকে বাঁচাতে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এদিকে নদীপারের অনেক পরিবার তাদের ঘর, আসবাপত্র ও গবাদি পশু সরিয়ে নিতে দেখা গেছে।
চরসুবুদ্ধি ইউপি সদস্য হারুন সরকার জানান, আগে একবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা এলাকটি পরিদর্শন করে গেছে। বর্ষা মৌসুমে এলেই নদী ভাঙনে অনেক জমি ও বসত ভিটা বিলীন হয়ে যায়। এখানে একটি গ্রামরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হলে মেঘনার ভাঙন থেকে মহিষভেড় গ্রামবাসী রক্ষা পাবে বলে জানান তিনি।
রায়পুরা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন জানান, খোঁজ নিয়ে নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে তাৎক্ষণিক সহায়তা হিসাবে চাল, ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হবে।
নরসিংদী জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় চন্দ্র শংকর জানান, মেঘনার বুকে জেগে ওঠা চরের কারণে নদীর গতিপথ বদলে গেছে। ফলে মহিষভেড় গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ওই চরটি কেটে সরিয়ে দিলেই ভাঙন থেমে যাবে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।
আরো পড়ুন : মৌসুমীকে নিয়ে কটুকথার বিষয়ে মিজান-জামালকে সতর্ক করল শিল্পী সমিতি