বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বুধবার (২৩ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে ‘যৌক্তিক ও সাহসী’ আখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি সাদিকে কায়েম।
বুধবার দিবাগত রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে গণঅভ্যুত্থানের অর্জন আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘খুনি সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম একটি অর্জন। প্রেক্ষাপট বিবেচনায় তা একটি যৌক্তিক ও সাহসী সিদ্ধান্ত।’
ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ওঠা নানাবিধ অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ সামনে এনে সাদিক কায়েম বলেছেন, ‘আমরা দেখে আসছি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী রেজিমে ছাত্রলীগ কী রকম ভয়ানক রূপ ধারণ করেছিলো। ভয়, ত্রাস, সন্ত্রাস, হত্যা আর ছাত্রলীগ সমার্থক। খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ক্যাম্পাস দখল, ছাত্র-শিক্ষক নির্যাতনসহ অপরাধের এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে তাদের বিচরণ ছিলো না।’
ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে প্রাণ হারানো সাধারণ ছাত্র ও রাজনৈতিক কর্মীদের কথা মনে করিয়ে দিয়ে ঢাবি শিবির সভাপতি যোগ করেন, ‘ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে শহিদ নোমানী, আবুবকর, বিশ্বজিৎ, আবরারকে কি ভয়ানকভাবে শহীদ করেছে ছাত্রলীগ। সর্বশেষ চব্বিশের বিপ্লবে শত-সহস্র ভাই-বোনকে পৈশাচিকভাবে রক্তাক্ত করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে যা বাংলাদেশের ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম কালো অধ্যায়। জুলাইয়ে শহীদ হওয়া নাসিমা, তরুয়া, ওয়াসীম, আবু সাঈদ, আলী রায়হান, মুগ্ধ, শান্তরা আমাদের চোখের সামনেই হারিয়ে গেলো অন্তিম ঠিকানায়!’
নিষিদ্ধ করার পর এখন ছাত্রলীগের যেসব নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে, তাদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাদিক কায়েম, ‘শুধু নিষিদ্ধ নয়, যারা খুন, ধর্ষণ, গণহত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত ছিলো ও সমর্থন দিয়ে গেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। পরবর্তীতে যেন দেশকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে না পারে সেদিকে ছাত্রজনতা ও সরকারের সচেতন দৃষ্টিই জাতির একান্ত প্রত্যাশা।’
আরো পড়ুন : ঈগল হান্ট অপারেশনে গোঁজামিল, মুদি দোকানি আবুকে হত্যা