গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধি: ঢাকা থেকে রাজশাহী ফেরার পথে নিখোঁজ হয়েছেন আশিক আলী (২৪) নামের এক নির্মাণ শ্রমিক। শেষবার যখন পরিবারে তার কথা হয় তখন আশিক জানিয়েছিলেন, কারা যেন তাকে বাস থেকে নামিয়ে দিয়েছেন। তখন তিনি সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার দুর্গা বেলপাড়া এলাকায় ছিলেন বলেও আশিক জানিয়েছিলেন। গত ৯ মে পরিবারের সঙ্গে এটিই তার শেষ কথা।
তারপর আর আশিকের খোঁজ পাওয়া যায়নি। আশিকের বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামে। বাবার নাম সোহরাব আলী। তিনি বগুড়ায় থাকেন। দুই ছেলেকে অনেক কষ্টে বড় করেছেন মা আঙ্গুরা বেগম। ছয়দিন ধরে ছোট ছেলে আশিকের খোঁজ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি। ছেলের সন্ধানে ছবি নিয়ে তিনি ছুটছেন এখানে-ওখানে।
শনিবার বিকালে ছেলের ছবি হাতে নিয়ে আঙ্গুরা জানান, বছরখানেক আগে আশিকের বিয়ে দিয়েছেন। সংসারের হাল ধরতে আশিক ঢাকার নবীনগরে স্টিল বিল্ডিংয়ে শ্রমিকের কাজ করেন। ঈদে বাড়ি এসেছিলেন। তারপর ৮ মে বাড়ি থেকে যান। কিন্তু বাড়ি থেকে ফিরতে দেরি করায় তাকে আর সাইটে কাজে নেওয়া হয়নি।
তাই সেদিনই বিকালে শ্যামলী পরিবহনের বাসে গ্রামের বাড়ি ফিরে আসছিলেন। রাতের মধ্যেই তাঁর বাড়ি পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু আসেননি। পরদিন সকালে অন্য এক ব্যক্তির মোবাইল থেকে ফোন করে জানান, তার ব্যাগ, টাকা, মোবাইল সব কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি আছেন সিরাজগঞ্জের সলঙ্গার দুর্গা বেলপাড়ায়। কিন্তু মা শুনেছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ। ছেলেকে আনতে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ যান। সেখানে গিয়ে ফোন করা নম্বরটিতে কল দিলে জানানো হয় এটি সলঙ্গা। ছেলের সন্ধানে ছবি নিয়ে আঙ্গুরা আবার সলঙ্গার দুর্গা বেলপাড়া যান। সেখানে বাজারের লোকজন ছবি দেখে তাকে জানান, ছেলেটিকে তারা বাজারে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছেন। তারপর কোথায় গেছেন তা তারা জানেন না। ছেলের সন্ধান না পেয়ে তিনি গ্রামে ফেরেন।
আঙ্গুরা জানান, তার এলাকায় গোদাগাড়ীর প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র। ছেলের নিখোঁজের বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রেও যান। কিন্তু সলঙ্গা থেকে নিখোঁজ বলে এখানে জিডি নেওয়া হয়নি। ছেলের সহায়তা পেতে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা চান।
এ বিষয়ে সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের জিলানী বলেন, এ রকম কোন ঘটনা তার জানা নেই। তাই এ বিষয়ে কোন বক্তব্যও নেই।
আরো পড়ুন : ৪ বছরেও শেষ হয়নি রামপাল বগুড়া নদীর খেয়াঘাট সেতুটি; উঠতে হয় মই বেয়ে