জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র মেনে নেয়ার চাপ এলেও গোঁ ধরেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি পক্ষান্তরে পুরো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা অর্জনের পক্ষে অটল। পুরো ফিলিস্তিন ভূখণ্ড যদি ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণে থাকে, তার অর্থ দাঁড়ায় ফিলিস্তিন বলতে আলাদা রাষ্ট্র থাকবে না। ফিলিস্তিন থাকবে ইসরাইলের অধীনে। আরও সহজ করে বললে বলা যায়, ফিলিস্তিনকে দখল করে নিতে চান তিনি।
সর্বশেষ জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ উগান্ডায় জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে ফিলিস্তিনকে অবশ্যই রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে বলে জোর দাবি জানান।
তিনি বলেন, তা নাহলে ফিলিস্তিন ও ইসরাইল সঙ্কটের কোনো সমাধান হবে না। দীর্ঘস্থায়ী হবে বর্তমানের যুদ্ধ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, বর্তমানে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাতে একটি ভবিষ্যত রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নয়। বরং তা এর উল্টো। এর মধ্য দিয়ে তিনি জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য যারা দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান প্রক্রিয়ার কথা বলছেন, তাকে উড়িয়ে দিলেন।
শুক্রবার ভবিষ্যত ফিলিস্তিন ভূখণ্ড নিয়ে ফোনে আলোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও নেতানিয়াহু।
উল্লেখ্য গাজায় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর হস্তক্ষেপের ফলে তার সরকারের মধ্যেই গভীর ফাটল প্রকাশ হয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও তার সম্পর্কে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে ইসরাইলের পাশাপাশি ভবিষ্যত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র- যা দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান, তা দীর্ঘস্থায়ী স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু হোয়াইট হাউস এ সপ্তাহে জানতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল সরকার স্পষ্টভাবে ভিন্নভাবে দেখছে বিষয়টি।
প্রায় এক মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো শুক্রবার ফোনে কথা বলেন জো বাইডেন ও নেতানিয়াহু। তাতে নেতানিয়াহুকে দায়িত্বে রেখে একটি দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান এখনও সম্ভব বলে মত দেন বাইডেন। কিন্তু শনিবার নিজের অবস্থান সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেন নেতানিয়াহু। তার অফিস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে ফোনকলের সময় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তার নীতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, হামাসকে ধ্বংস করে দিয়ে গাজার ওপর নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতেই হবে ইসরাইলকে। যাতে ইসরাইলের প্রতি আর কোনো হুমকি হতে না পারে গাজা। এটা এমন একটি বিষয় যা ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্বের দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
শনিবার এক্সে নেতানিয়াহু বলেছেন, জর্ডানের পশ্চিমে পুরো এলাকার নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ পেতেই হবে ইসরাইলকে।
উল্লেখ্য, ওই পশ্চিম এলাকায় আছে ইসরাইলের দখল করে নেয়া পশ্চিম তীর। এর ফলে গাজা পরিস্থিতি এবং এ নিয়ে যে চলমান রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উদ্যোগ তা কতটুকু অগ্রসর হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়ে গেছে।
আরো পড়ুন : মির্জা আব্বাস ও এ্যানীর মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দিল হাইকোর্ট