আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের মানুষ যেন ভোট দেয়, সেই পরিবেশ তৈরি করতে স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আপনারা তৃণমূলের জনগণের ভোটে নির্বাচিত সেবক। আপনারা যথাযথ দায়িত্ব পালন করে মানুষের আস্থা অর্জন করে এগিয়ে যাবেন। মানুষ যেন আবার ভোট দেয়, সেই পরিবেশ তৈরি করবেন। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস ২০২৩ উদ্যাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্থানীয় সরকারের বরাদ্দ বৃদ্ধি ছাড়াও বিভিন্ন স্তরে নির্বাচিতদের পদমর্যাদা নির্ধারণ করে দেওয়ার পাশাপাশি সম্মানি ভাতা বৃদ্ধির দাবি জানান জনপ্রতিনিধিরা। তারা বলেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর সমস্যার সমাধান এবং শক্তিশালী করা হলে একদিন এসব প্রতিষ্ঠান সরকারের অনেক সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসতে পারবে। তবে জনপ্রতিনিধিদের পদমর্যাদা নির্ধারণ এবং সম্মানি বৃদ্ধির দাবির ব্যাপারে কোনো আশ্বাস দেননি প্রধানমন্ত্রী।
দেশের আট বিভাগের সব সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তাদের মধ্যে ছিলেন নির্বাচিত মেয়র ও চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ সদস্য, ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর। সব মিলিয়ে আট হাজারেরও বেশি উপস্থিত জনপ্রতিনিধির মধ্য থেকে ২৭ জন বক্তৃতা করেন।
শেখ হাসিনাকে পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখার আশাবাদ ব্যক্ত করে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরা। আগামী সংসদ নির্বাচনে আগের চেয়েও বেশি ভোটে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করে তারা বলেন, দেশের বর্তমান উন্নয়ন-অগ্রগতি ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা এগিয়ে নিতে হলে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। তৃণমূল জনপ্রতিনিধিরা ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামী নির্বাচনে অতীতের চেয়েও রেকর্ড ভোটে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনবেন।
জনপ্রতিনিধিদের বক্তৃতা শেষ হলে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই, আজ যে দীর্ঘদিনের উন্নয়নের ফসল, এটা যেন অব্যাহত থাকে। দেশকে কেউ যেন পিছিয়ে দিতে না পারে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আমরা আরও উজ্জ্বল করে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াব।
সারা দেশ থেকে আগত স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ডেঙ্গু প্রতিরোধে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধ এবং মশার হাত থেকে বাঁচতে হলে মশারি ব্যবহার করতে হবে। আশপাশের ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে। নিজেদেরও সচেতন হতে হবে। এজন্য বাড়ির চারপাশ যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে, সেজন্য সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, দেশে স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক ধারা ছিল বলেই গ্রামপর্যায়ে উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে। আবারও সুযোগ পেলে প্রতিটি গ্রামকে শহরের মতো গড়ে তোলা হবে। আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর স্থানীয় সরকারকে যথেষ্ট অর্থ বরাদ্দ দিয়ে তৃণমূলে উন্নয়নের সুযোগ করে দিয়েছি। কষ্টের এ ফসল যেন কেউ নষ্ট করতে না পারে। অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে, সেভাবেই সবাইকে কাজ করতে হবে। স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়নি, ব্যর্থ হতেও আমরা দেব না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনো অনেক গ্রামে কাঁচা রাস্তা আছে। সেগুলো আল্লাহর রহমতে কাঁচা থাকবে না। আবারও যদি জনগণের সেবা করার সুযোগ পাই, নিশ্চয়ই আমরা সেগুলো করে দেব। প্রতিটি গ্রাম শহরের মতো করে গড়ে উঠবে।
খাদ্য উৎপাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, শুধু বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন করাই নয়, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। সব জায়গায় ফসল ফলাবেন। তাতে আপনারাই লাভবান হবেন। আমি লাভবান হয়েছি। আমার মা-বাবার যে জমি ছিল, এর কিছু অংশ চাষ করেছিলাম। খরচ বাদে ২ লাখ ২৭ হাজার টাকা আয় হয়েছে। ২৭ হাজার টাকা সবাইকে বিলিয়ে দিয়েছি। কাজেই নিজেরা ফসল ফলাব, নিজেরা খাব। কারও কাছে হাত পাততে হবে না। আমি অনুরোধ করব-আপনারা নিজেদের জমি চাষ করেন, গাছ লাগান, বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হোন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করি। কোনো মানুষ দরিদ্র থাকবে না। নানানভাবে তাদের এগিয়ে নেওয়ার কাজ করছি। আমাদের যা সম্পদ আছে, তা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। সেভাবে কাজ করছি। টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় আছি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আছে বলেই এ কাজ করে যেতে পারছি। গ্রামপর্যায়ে অসংখ্য রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, কালভার্ট করে দিয়েছি। এখনো গ্রামে অনেক রাস্তা কাঁচা আছে, সামনে ক্ষমতায় এলে সব পাকা করে দেব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষকে ক্ষমতায়ন করে দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা দিলেন, তখনই এলো আঘাত। জাতির পিতাকে সপরিবারে শাহাদতবরণ করতে হলো। আমি হারালাম বাবা-মা, ভাই-বোন। তবে পেয়েছি বিশাল জনগোষ্ঠী। বাংলাদেশের মানুষই আমার আপনজন। তারাই আমার সব শক্তি। আমি ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণ করেছি। মন্দির ও প্যাগোডা-যখন যেখানে যেটা দরকার করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, তৃণমূলের জন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক এবং প্রবাসীদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক করে দিয়েছি। তারা তো এ ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এখনো দালালের খপ্পরে পড়ে বিদেশে গিয়ে বিপদে পড়ে। এগুলো খেয়াল রাখবেন। পাশাপাশি মাদকের বিরুদ্ধে আপনাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। কেউ যাতে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে না জড়ায়, সেটা আপনাদের দেখতে হবে।
গণভবনে উপস্থিত সারা দেশের জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা তৃণমূল পর্যায়ের জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি। আপনাদের উপস্থিতিতে গণভবনের মাটি ধন্য হয়েছে। তৃণমূল মানুষের প্রতিনিধি হিসাবে আপনারা এখানে এসে বক্তব্য দিয়েছেন, আপনাদের আমি ধন্যবাদ জানাই।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সম্মানি ভাতা ও বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি করে দিন। এটায় নতুন করে কোনো খরচ করতে হবে না। ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পাশাপাশি জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের পদমর্যাদা নির্ধারণের দাবিও করেন তিনি।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন জলবায়ু তহবিল থেকে রাজশাহীতে বরাদ্দ দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় খেলার মাঠ, শিশু পার্ক ও বিনোদনের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় জায়গার অভাবে সেটা করা যাচ্ছে না। জেলা প্রশাসনের অধীন থাকা সরকারি খাসজমি সিটি করপোরেশনকে দেওয়া যেতে পারে।
খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা হলে একদিন এ প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারবে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশকেও বলেছেন, ‘তোমাদের দেশে গেলাম না। প্রয়োজনে অন্য মহাদেশ খুঁজে নেব।’ এটাই বঙ্গবন্ধুকন্যার সাহসী নেতৃত্ব। আগামী সংসদ নির্বাচনেও জয় আমাদের সুনিশ্চিত। আমাদের প্রধানমন্ত্রী আগামীবারও প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন।
পিরোজপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সালমা রহমান হ্যাপী বলেন, বিএনপি-জামায়াত কে কী ভাবল না ভাবল, সেটা বিষয় নয়। আপনার শাসনামলকে ইতিহাসই চিরদিন স্মরণ করবে। আগামী দিনে আপনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চাই। ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেই আপনাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করব।
নীলফামারী পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ বলেন, যতদিন শেখ হাসিনা বেঁচে থাকবেন, ততদিনই তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেশের সেবা করে যাবেন-এটাই আমাদের প্রত্যাশা। দেশের ৩২৯টি পৌরসভার মেয়র প্রতিজ্ঞা করেছেন আগামীবারও শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত করবেন।
নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী বলেন, যতদিন শেখ হাসিনার হাতে দেশ থাকবে, ততদিন বাংলাদেশ নিরাপদ থাকবে। এমন কোনো সেক্টর নেই, যেখানে তার উন্নয়নের ছোঁয়া পড়েনি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন ক্যাপিটাল সিটির (রাজধানী ঢাকা) কাউন্সিলরদের পদমর্যাদা নির্ধারণ এবং তাদের সম্মানি ভাতা বৃদ্ধির অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী দেশের ৭৩ ভাগ মানুষের ভোটে আওয়ামী লীগ জয়ী হবে। টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য শেখ হাসিনাকে আগাম অভিনন্দন জানান এই কাউন্সিলর।
চাঁদপুরের ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের যথাযথ সম্মান দেখালে তারা দেশ ও মানুষের জন্য আরও বেশি করে কাজ করতে পারবেন। এজন্য তাদের সম্মানি ভাতা স্থানীয় সরকারের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে বৃদ্ধির অনুরোধ করেন তিনি।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় আরও বক্তৃতা করেন সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, সিলেটের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পেয়ারুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও দুমকি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ড. হারুন-অর রশীদ হাওলাদার, মিউনিসিপ্যাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ম্যাব) সভাপতি ও নীলফামারী পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম রেজাউল হায়দার চৌধুরী বাবুল, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত কাউন্সিলর নীলুফার ইয়াসমিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ সদস্য বাবুল মিয়া, গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য শারমিন নাহার, মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান রিংকু রঞ্জন দাস, মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান বেবী নাজনীন, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোয়াজিদুল হক তুহিন, সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেনজির হেলাল, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার বড়কাশিয়া বিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন চৌধুরী, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ শুকুর আহমেদ, চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার রাউজান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএম জসিম উদ্দিন হিরু প্রমুখ। স্বাগত বক্তৃতা করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইবরাহিম।
আরো পড়ুন : ‘রহস্যের আগুনে’ পুড়ছে মার্কেট- ব্যবসায়ীরা বলছে পরিকল্পিত