রাত পেরোলেই বেজে যাবে যুদ্ধের দামামা। বিশ্বকাপ ফুটবলের যুদ্ধ। চার বছরের অপেক্ষা শেষে মরুর বুকে বসতে চলেছে বিশ্বকাপ ফুটবলের মহাযজ্ঞ। আল বায়াত স্টেডিয়ামে স্বাগতিক কাতার আর ইকুয়েডরের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠবে দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের। বিশ্বসেরার মুকুট পরতে এক মাস ধরে লড়াই চলবে বিশ্ব ফুটবলে। তারকাদের সঙ্গে নজর থাকবে নতুনদের ওপরও। সারা বিশ্বের নজর থাকবে কাতারে ফুটবল যুদ্ধের দিকে।
এবারের বিশ্বকাপে মাঠের খেলার পাশাপাশি নিয়মকানুনেও থাকছে কিছু নতুন চমক। মাঠের খেলা পরিচালনা থেকে শুরু করে মাঠের বাইরেও নতুন কিছু নিয়ম প্রবর্তন করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা।
গ্রুপ পর্বে পয়েন্ট সমান হলে : এবারের বিশ্বকাপে ৮টি গ্রুপে ভাগ হয়ে লড়াই করবে ৩২টি দল। গ্রুপে থাকা চারটি দলের প্রতিটি দল তিনটি করে ম্যাচ খেলবে। তিন ম্যাচ শেষে পয়েন্ট টেবিলের সেরা দু’দল শেষ ষোলোর টিকিট পাবে। যদি গ্রুপ পর্বের ম্যাচে কোনও দলের পয়েন্ট সমান হয়, গোল পার্থক্যে এগিয়ে থাকা দল যাবে পরের পর্বে। তখনও যদি গোল সমান হয় তখন যে দল বেশি গোল করবে তারাই পরের পর্বের টিকিট পাবে।
তারপরও যদি পয়েন্ট সমান হয়, গোল পার্থক্য সমান এবং গোল করার সংখ্যাও সমান হয় তখন গ্রুপ পর্বে একে অপরের লড়াই দেখা হবে। সেখানেও যদি সবকিছু সমান হয় তাহলে যে দল কম কার্ড দেখেছে, সেই দল যাবে পরের রাউন্ডে। তাতেও যদি সমান হয় তাহলে ফিফার র্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকা দল যাবে শেষ ষোলোতে।
অফসাইড : ফুটবলে একজন ফুটবলারের অফসাইডের নির্দিষ্ট নিয়ম আছে ফিফার। তারপরও এবারের বিশ্বকাপেও প্রযুক্তির সহায়তায় অফসাইড ধরা হবে। এতে অফসাইড নিয়ে বিতর্ক থাকবে না। ২০১৮ বিশ্বকাপে ভিএআর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল। কাতারে অফসাইডের জন্য চালু হচ্ছে সেমিঅটোমেটেড অফসাইড প্রযুক্তি। প্রতিটি স্টেডিয়ামের ছাদের নিচের অংশে ১২টি ট্র্যাকিং ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। কোন অফসাইড হলেই ভিডিও ম্যাচ অফিশিয়ালদের কাছে অফসাইড সংকেত চলে যাবে।
খেলোয়াড় পরিবর্তন : করোনাভাইরাসের আগে ফুটবলে তিন খেলোয়াড় পরিবর্তন করা যেত। করোনার পর থেকে ৯০ মিনিটের মধ্যে পাঁচটি পরিবর্তন করার নিয়ম শুরু হয়। করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায়, আবারও নিয়ম পাল্টেছে। এবারের বিশ্বকাপে পাঁচ জন ফুটবলার পরিবর্তন করা গেলেও সেটি করতে হবে তিন বারের মধ্যে। বিরতির সময় বাদ দিয়ে তিন বারের মধ্যে পাঁচ জন ফুটবলার পরিবর্তন করা যাবে। এটি খেলোয়াড়কে সতেজ রাখতে এবং কোচকে কৌশল পরিবর্তন করতেও সাহায্য করবে। পেনাল্টি শুটআউটের আগে মূল একাদশে পরিবর্তন বা গোলরক্ষক পরিবর্তন করতে পারবে।
পেনাল্টির সময় লাইনে পা রাখতে হবে গোলরক্ষককে : ইউরোপের অনেক লিগেও এই নিয়ম চালু আছে । ফিফা বিশ্বকাপে এই নিয়ম থাকাতে অবাকের হওয়ার কিছু নেই। পেনাল্টি কিকের নিয়ম বলছে, পেনাল্টি কিকের আগে গোলরক্ষকের একটি পা অবশ্যই লাইনে থাকতে হবে।
ম্যাচ চলাকালীন বেঞ্চের তালিকা: বিশ্বকাপ দলে অন্তত ২৩ জন থাকবে। তবে সর্বোচ্চ ২৬ জন ফুটবলার রাখা হয়েছে। ম্যাচ চলাকালীন দলের বেঞ্চে ২৬ জনের বেশি বসতে পারবেন না। এর মধ্যে ১৫ জন বদলি ফুটবলার এবং ১১ কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন অবশ্যই দলের চিকিৎসক হতে হবে।
নারী রেফারি : এই প্রথমবারের মত পুরুষ ফুটবল বিশ্বকাপে নারী রেফারিদের দেখা যাবে। বছরের পর বছর এর উল্টোটা দেখা গেছে বিশ্ব ফুটবলে। নারীদের ফুটবলে পুরুষ রেফারি ছিলো। এবার পুরুষ ফিফা বিশ্বকাপে নারী রেফারিদের দেখা যাবে।
নতুন নিয়মের সঙ্গে নতুন নতুন চমক নিয়েই মরুর বুকে বসতে চলেছে বিশ্বকাপের মহারণ। আগামী এক মাস পুরো বিশ্ব বুঁদ হয়ে থাকবে ফুটবলের এই মহাযজ্ঞে। আসর বসার অপেক্ষা শেষ, এবার অপেক্ষা ২৮ দিন পর লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে বিশ্বসেরার ট্রফি মাথায় তুলবে কে সেটি দেখার।
আরো পড়ুন : কন্যাকে প্রকাশ্যে এনে জল্পনা বাস্তবে রুপ দিলেন কিম জং-উন