নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝালকাঠি: ঝালকাঠি জেলা কারাগারের জেলার মো. আক্তার হোসেন শেখের বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব ও অশালীন আচরণের বিষয়ে কারা মহাপরিদর্শক ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ, অডিও-ভিডিও কলের রেকর্ডিং ফাঁসের সংবাদ প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে তোলপাড় হয়। এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হওয়ার পরেই জেলার অভিযোগকারীর স্বামীকে জিম্মি ও ভয়ভিতি প্রদর্শন করে কারাগারের মধ্যে সাদা কাগজে স্বাক্ষর ও দশ লাখ টাকার বিনিময়ে সমঝোতা করেছেন বলে বিশ্বস্ত সুত্র জানিয়েছে । অভিযোগকারী সুমাইয়া গত বুধবার জানিয়েছিলেন, ‘আমি দিন দিন অসহায় হয়ে পরেছি। কারণ হিসেবে জানান, একদল লোক আমার পিছনে লেলিয়ে দিয়েছে জেলার। ওদিকে কারাগারে আমার স্বামী মামুন অর রশিদ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছে। তিনি জানিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার ডিসি অফিসে স্বাক্ষী দিতে যাবো এবং আদালতে জেলারের বিরুদ্ধে মামলা করবো।’ শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে, দশ লাখ টাকার বিনিময়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করেছেন অভিযোগকারী সুমাইয়া আক্তার।
দেশব্যাপী বিষয়টি তোলপাড় হলেও ঝালকাঠি কারাগারের জেলার বহাল তবিয়তে থাকায় এবং কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় প্রশ্ন উঠেছে সচেতন মানুষের মাঝে। গত ৩১ আগষ্ট থেকে ধরাবাহিকভাবে অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকাগুলোতে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। সংবাদ প্রকাশের পর দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। কারাবন্দি নলছিটির মামুন অর রশিদের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার জেলার আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে কারা মহাপরিদর্শক ও ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন ৩০ আগষ্ট।
অভিযোগ অস্বীকার করে ঝালকাঠি জেলা কারাগারের জেলার মো. আক্তার হোসেন শেখ বলেন, অভিযোগটি সত্য না। এটা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক ও বানোয়াট।
তবে সমঝোতার জন্য ঝালকাঠি বার সংলগ্ন একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় জেলারকে দেখা গেছে। সেখানে ঝালকাঠির কয়েকজন সাংবাদিক মধ্যস্থতা করেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সুত্র এর মাধ্যমে জানা যায়। এছাড়া বেশ কিছু সাংবাদিক তাদের নিজ ওয়ালে মোটা অংকের অর্থের বিনিময় জেলারের সাথে ভুক্তবোগী নারীর রফাদফা হয়েছে মর্মে পোষ্ট দিতে দেখা গেছে।
যমুনা টেলিভিশনের ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা দুলাল সাহা তার নিজ ফেইসবুক ওয়ালে লিখেন, ‘জেলার ও নারী অভিযোগকারী যদি মীমাংসা হয়েও যায়, তারপর তদন্তকারী কমিটি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। কিন্তু মানুষের অভিযোগ- তদন্ত টীম ও নাকি ৫ লাখ টাকায় ম্যানেজ??? ম্যানেজ হওয়ার ঘটনা সত্য ??? পুলিশ, গোয়েন্দা, সাংবাদিক, সরকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি করার অপরাধ, পুলিশ বাহিনীর সুনাম ক্ষুন্ন করার কারণে মামলা করতে পারেন।”
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এনডিসি মং এছেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, নারীকে তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ায় জেলারের বিরুদ্ধে কারা অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসক বরাবর ওই নারী অভিযোগ পাঠিয়েছেন ।
সুমাইয়া আক্তার সম্প্রতি বলেছিলেন আমাকে কারা মহা পরিদর্শকের দপ্তর থেকে কল দিয়ে জানানো হয়েছে যে, জেলারের কু প্রস্তাবের ঘটনায় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া একটি গ্রুপের মাধ্যমে লাখ টাকার বিনিময়ে আপোষ মিমাংসার প্রস্তাব দিয়েছে জেলার আক্তার সাহেবের পক্ষে। আমি আপোষ মিমাংসার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে বিচার চেয়েছি।
৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে সুমাইয়াকে কল করা হলে তিনি কল রিসিভ করার পরে কোন বক্তব্য না দিয়ে কল কেটে দেন।
এবাপারে মানবাধিকার কর্মী নীলা জানান, ‘নৈতিকস্খলন জনিত কারণে অবিলম্ভে ঝালকাঠী কারাগারের জেলারের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হোক। যারা এমন কথা বলে তারা জেলার পদে থাকার নৈতিকতা হারিয়ে ফেলেছে। তার মুখের ভাষাই বলে দেয় তিনি একজন অসামাজিক ও লুচ্চা শ্রেনী মানুষ।’
এ বাপারে ঝালকাঠীর সুশীল সমাজ, রাজনীতিবীদ ও সাংবাদিকরা জানিয়েছেন ,কারাগারের জেলার একজন দুর্নীতিবাজ তিনি টাকা ও সারাদিন নারীদের সাথে কল করে কথা বলে সারাদিন ব্যস্ত থাকে। তারা দ্রুত জেলারকে অপসারণের দাবী জানান।
আরো পড়ুন : ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ইন্টার্নি করতে আশা ডিপ্লোমা ছাত্র আরিফ যখন ডাক্তার