রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দার। শনিবার তিনি বাসা থেকে কলেজে যাচ্ছিলেন। তার কপালে পরা ছিল টিপ। রাস্তায় তা দেখেই খেপে যান পুলিশের এক সদস্য। তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। প্রতিবাদ করলে ওই শিক্ষিকার ওপর মোটরসাইকেল তুলে দেওয়ারও চেষ্টা করেন পুলিশ সদস্য। শনিবার সকালে রাজধানীর ফার্মগেটে সেজান পয়েন্ট বিল্ডিংয়ের সামনে ঘটে এমন ঘটনা।
আরো পড়ুন : ছাত্রদলের ক্যাডারদের হামলার শিকার ছাত্রলীগ নেত্রীর আজ সবিভিশিকাময় আজ সেই দিন
সড়কে পুলিশের অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণে আতঙ্কিত ওই শিক্ষিকা রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় ঘটনা জানিয়ে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত সেই পুলিশ সদস্যকে চিহ্নিত করা যায়নি।
ড. লতা সমাদ্দার জানান, পুলিশের ওই সদস্য ইউনিফর্ম পরা ছিলেন। ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি তার নেমপ্লেট দেখতে না পারলেও চলে যাওয়ার সময়ে মোটরসাইকেল নম্বরটি মনে রাখতে পেরেছেন। তার মোটরসাইকেল নম্বর-১৩৩৯৭০।
তিনি বলেন, টিপ পরাতে পুলিশের পোশাক পরা একজন সদস্য তাকে যেভাবে গালাগাল করেছেন, তা মুখে উচ্চারণ করার মতো নয়। ওই লোকটাকে একজন সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী মনে হয়েছে।
থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে তিনি বলেছেন, শনিবার সকাল আনুমানিক ৮ টা ২০ মিনিটের দিকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক বাসা থেকে রিকশায় করে ফার্মগেট আনন্দ সিনেমা হলের সামনে নামেন। সেখান থেকে হেঁটে তেজগাঁও কলেজে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। তখন সেজান পয়েন্টের সামনে একটি মোটরসাইকেলের উপর পুলিশের পোশাক পরা এক ব্যক্তি বসে ছিলেন। ওই মোটরসাইকেলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে ওই ব্যক্তি আমার কপালে টিপ পরাকে উদ্দেশ্য করে বাজে মন্তব্য করেন। এক পর্যায়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। পেছনে ফিরে ঘটনার প্রতিবাদ করায় ফের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়।
শিক্ষিকা তার অভিযোগে বলেছেন, তিনি প্রতিবাদ করায় পুলিশের ওই সদস্য মোটরসাইকেল চালিয়ে তার গায়ের উপর উঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। সরে গিয়ে প্রাণে রক্ষা পেলেও আহত হন তিনি। ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি পাশেই দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশকে বিস্তারিত জানান।
ড. লতা সমাদ্দারের স্বামী অধ্যাপক ড. মলয় বালা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগের শিক্ষক। তিনি বলেন, পুরো ঘটনায় তারা হতভম্ব। ঢাকার রাস্তায় টিপ পরাতে একজন শিক্ষিকাকেই এমনভাবে হেনস্তা হতে হলো, তাও আবার পুলিশের একজন সদস্যের মাধ্যমে! এজন্যই আতঙ্কটা বেশি।
বিষয়টি জানতে চাইলে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, শিক্ষিকার অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) আকারে নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি থানা পুলিশের নাকি ট্রাফিক বিভাগের সদস্য তা তদন্ত হচ্ছে। বিষয়টি ট্রাফিক বিভাগকেও জানানো হয়েছে। তাকে শনাক্ত করে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরো পড়ুন : রবিবার থেকে রাজধানীতে সুলভ মূল্যে দুধ-ডিম-মাংস বিক্রি করবে সরকার