ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে তোফাজ্জল নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবককে হত্যার ঘটনায় ৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শুক্রবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে তোফাজ্জল হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকায় দায়ে ৮ শিক্ষার্থীর হলের সিট বাতিল করে হল প্রভোষ্ট চিঠি দিয়েছেন। এ ছাড়া তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামীকাল আনুষ্ঠানিকভাবে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হবে। তবে বহিষ্কার হওয়া ওই ৮ শিক্ষার্থীর নাম-পরিচয় তিনি জানাননি।
বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ওই হলে তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা করেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ছয় শিক্ষার্থী। তারা হলেন, মো. জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, মো. মোত্তাকিন সাকিন, আল হুসাইন সাজ্জাদ, আহসানউল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম। এরা সবাই ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন শুক্রবার বিকাল থেকে এই ছয় শিক্ষার্থীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে রাত ৯টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
সূত্র বলছে, ছয় শিক্ষার্থীর জবানবন্দি অনুযায়ী, তোফাজ্জল হোসেন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন ১৫ থেকে ২০ জন। তারা সবার নাম প্রকাশ করেছেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে ছাত্রদের ছয়টি মোবাইল ও মানিব্যাগ চুরি হয়েছিল। তোফাজ্জল সেদিন রাত আটটার দিকে হলের ফটক দিয়ে মাঠের ভেতরে যান। তখন কয়েকজন শিক্ষার্থী চোর সন্দেহে তাকে আটক করে হলের অতিথিকক্ষে নিয়ে যান। পরে জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাকে স্টাম্প দিয়ে মারধর করা হয়। এরপর তাকে হলের ক্যানটিনে নিয়ে রাতের খাবার খাওয়ানো হয়। খাওয়া শেষে আবার তাকে হলের অতিথিকক্ষে এনে ব্যাপক মারধর করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।
আসামিরা বলেন, সেদিন অতিথিকক্ষে মারধরের পর রাত ১২টার দিকে হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষক তোফাজ্জলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তারা জানতে পারেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় তোফাজ্জল মারা গেছেন।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার ফজলুল হক হল থেকে ছয় শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আরো পড়ুন : বন্যায় ১৪ হাজার ২৬৯ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি : ত্রাণ উপদেষ্টা