সৈয়দ নজরুল ইসলাম: আমরা আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে যথাযথভাবে ভয় কর আর তোমরা মৃত্যুবরণ কর না মুসলিম না হয়ে। (আলে ইমরান-১০২)। দুনিয়া আজ সভ্যতায় ও শোভায় অনেক উৎকর্ষ সাধন করেছে। ফলে তা অনেক মানুষকে ধোঁকায় ফেলেছে। যেসব মানুষ দুনিয়ার ধোঁকায় পড়েছে এবং দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, তারা ভুলে গেছে আখেরাতের কথা। তারা পার্থিব জীবনের বাহ্যিকতা জানে, অথচ আখেরাত নিয়ে গাফিল। সম্মানিত সব ভাইয়ের প্রতি আমার আর্জি, আমি এবং আমরা স্ব স্ব অবস্থান থেকে তাদের মতো যেন না হই। আমাদের জেনে রাখা উচিত আমল নির্ভর করে শেষের ওপর। যে যে অবস্থায় মারা যাবে তার ওপর। একজন মানুষ ভালো আমল করতে থাকে কিন্তু মারা যায় কুফরি অবস্থায় ফলে সে জাহান্নামি হয়ে যায়। অপরপক্ষে একজন মানুষ খারাপ আমল করতে থাকে কিন্তু মারা যায় ভালো অবস্থায় ফলে সে জান্নাতি হয়ে যায়। এ দুনিয়া হচ্ছে ক্ষণিকের আর আখেরাত হচ্ছে স্থায়ী আবাস। দুনিয়ার বুকে আমরা প্রত্যেকেই একজন পথিক, পথচারী ও মুসাফির মাত্র। রাত ও দিন যত পেরিয়ে যাচ্ছে ততই আমরা আখেরাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। অতএব আখেরাতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত। আল্লাহর সাক্ষাতের প্রস্তুতি নেওয়া আবশ্যক। চিরস্থায়ী আবাসের জন্য আমল করা বাঞ্ছনীয়। অস্থায়ী ও ভঙ্গুর আবাসের মোহে আকৃষ্ট হয়ে পড়লে দুনিয়াও আমাদের দিকে ঝুঁকে পড়বে। আল্লাহ বলেন, সেদিন মানুষ পূর্ব তৎপরতার কথা স্মরণ করবে কিন্তু এই স্মরণ তার কোনো কাজে আসবে না। সেদিন বিপথগামী মানুষ বলবে, হায় আমি যদি এই জীবনের জন্য আগে কিছু পাঠাতাম, সেদিন মানুষের এ স্মরণ, এই উপলব্ধি কোনো উপকারে আসবে না। বস্তুত, সেদিন তার শাস্তির মতো কেউ শাস্তি দিতে পারবে না এবং তার বন্ধনের মতো কেউ বাঁধতে পারবে না। বলা হবে হে প্রশান্তমনের অধিকারী তুমি সন্তুষ্ট ও সন্তোষজনকভাবে তোমার প্রভুর কাছে ফিরে এসো। অতঃপর তুমি আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হও এবং জান্নাতে প্রবেশ করো (সুরা আল-ফজর আয়াত ২৩-৩০)। হে আল্লাহর বান্দারা, আমরা আমাদের দুনিয়া ও আখেরাত নিয়ে চিন্তা করি এবং স্মরণ করি। আমরা যেন চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায় হয়ে না যাই যারা দুনিয়ার বুকে চড়ে বেড়ায় এবং মৃত্যুর কথা ভুলে যায়, ভুলে যায় জবেহ হওয়ার মাধ্যমে মৃত্যুর কথা। তবে চতুষ্পদ জন্তুরা তাদের এরূপ পরিণতির জন্য নিন্দনীয় নয় কারণ আল্লাহ সুবহানুতায়ালা তাঁর বান্দাদের কল্যাণ সাধনের জন্য তাদের সৃষ্টি করেছেন। এখানেই তাদের পর্বশেষ। জাহান্নাম ও জান্নাত তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। মানুষ হিসেবে আমাদের যেন ওইরূপ ভয়াবহ অবস্থা মোকাবিলা করতে না হয়। সে জন্য সময় থাকতে আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া আমাদের একান্ত আবশ্যক। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর বাণী অনুযায়ী আমল করে মুসলিম হয়ে মৃত্যুবরণ করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।
সুত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
আরো পড়ুন : তফসিল হলে অলআউট আন্দোলনে নামছে বিরোধীরা