স্টাফ রিপোর্টার : চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। দুই দফা জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে সমাহিত করা হয় এই আইনজ্ঞকে। গতকাল সকালে রাজধানীর বারিধারা জামে মসজিদে প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। বাদ জোহর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে আরকে মিশন রোডের নিউনেশন ভবনের সামনে তৃতীয় জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি জানাজাতেই বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতি ছিল। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে মরহুমের কফিনে প্রধান বিচারপতি, অ্যাটর্নী জেনারেল অফিস ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে বিকালে আজিমপুর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয় তাকে।
দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সবচেয়ে বড় জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার আগে মইনুল হোসেনের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির। পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া কামনা করেন ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও বড় ছেলে জাবেদ হোসেন।
জানাজায় অংশ নেন সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন, আপিল বিভাগের বিচারপতি, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা।
এদিকে, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির বেঞ্চের সিদ্ধান্তে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক এই সভাপতির মৃত্যুতে তার সম্মানে বেলা ১১টা থেকে দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত আপিল বিভাগের বিচার কাজ বন্ধ রাখা হয়। আর দুপুর ২টার পর থেকে হাইকোর্টের সব বেঞ্চে বিচার কাজ বন্ধ থাকে।
শনিবার রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ইন্তেকাল করেন। নির্ভীক সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার জ্যেষ্ঠপুত্র ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ১৯৪০ সালের জানুয়ারি মাসে পিরোজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকার নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। ছাত্রজীবনে স্কাউট আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করে ব্যারিস্টারি পড়তে লন্ডন যান এবং মিডল টেম্পল-ইন-এ ভর্তি হন। সেখান থেকে ফিরে এসে ১৯৬৫ সালে তিনি হাইকোর্টে আইন পেশা শুরু করেন। ১৯৬৯ সালে বাবার আকস্মিক মৃত্যুর পর ইত্তেফাক সম্পাদনার গুরুদায়িত্ব তিনি পালন করেন। পরে ১৯৭৩ সালে ইত্তেফাকের সম্পাদকম-লীর সভাপতি হন। একই বছর বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া-কাঁঠালিয়া আসন থেকে নির্বাচিত হন।