দুটি সীমিত ও আটটি ট্রেনের চলাচল স্থগিত

অর্থনীতি ক্রাইম নিউজ জনদুর্ভোগ জাতীয় প্রচ্ছদ ভ্রমণ মুক্তমত হ্যালোআড্ডা

বিশেষ প্রতিনিধি : চলমান হরতাল-অবরোধে নাশকতা এড়াতে চার জোড়া ট্রেনের চলাচল স্থগিত করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। চলাচলের পথ সীমিত করা হয়েছে এক জোড়া ট্রেনের। এসব ট্রেনের সব কটিই রাতে চলাচল করে।

রেলের হিসাবে এক জোড়া ট্রেন হলো গন্তব্য স্থানে যাওয়া ও আসা। অর্থাৎ চার জোড়া ট্রেনের চলাচল স্থগিত মানে আটটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল হলো। আর দুটি ট্রেনের যাতায়াত পথ সীমিত করা হয়েছে। বর্তমানে যাত্রীবাহী সাড়ে তিন শর বেশি ট্রেন রয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র বলছে, রাতে চলাচলকারী ট্রেনগুলোতে এমনিতেই যাত্রী কিছুটা কম হয়। আবার কিছু কিছু পথ এত নির্জন যে রাতে পাহারা দেওয়া কঠিন। এ ছাড়া নাশকতার আশঙ্কায় প্রায় প্রতিটি পথে যাত্রীবাহী ট্রেনের আগে পর্যবেক্ষণের জন্য ট্রেন (পাইলট) চালানো হয়। এতে ইঞ্জিনেরও কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে চার জোড়া ট্রেনের যাত্রা বাতিল এবং এক জোড়া ট্রেনের যাত্রা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।

জানতে চাইলে রেলের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান আজ শুক্রবার রাতে বলেন, এটা বড় কোনো ঘটনা নয়। রাতে কিছু ট্রেনে যাত্রী পাওয়া যায় না। এ ছাড়া হরতাল-অবরোধও আছে। সার্বিক বিবেচনা করে কিছু ট্রেনের যাত্রা সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত রাখা হচ্ছে। আর একটি ট্রেনের যাত্রা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।

চলাচল স্থগিত
# পার্বতীপুর-রাজশাহী উত্তরা এক্সপ্রেসের দুটি ট্রেন।
# ঈশ্বরদী-রাজশাহী পথে দুটি লোকাল ট্রেন।
# ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পথে দুটি কমিউটার ট্রেন।
# ময়মনসিংহ-জামালপুরের ভুয়াপুর দুটি লোকাল ট্রেন।
চলাচল সীমিত
আন্তনগর যমুনা এক্সপ্রেসের দুটি ট্রেন ঢাকা-জামালপুর

রেলওয়ে থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, পার্বতীপুর-রাজশাহী পথে একটি আন্তনগর ট্রেন আসা-যাওয়া করে। এর নাম উত্তরা এক্সপ্রেস। রেলের পশ্চিমাঞ্চল থেকে এক আদেশে, নাশকতার আশঙ্কা উল্লেখ করে গতকাল থেকে এই ট্রেনটির চলাচল সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলে রাজশাহী ও ঈশ্বরদীর মধ্যে চলাচলকারী একটি লোকাল ট্রেন ১৪ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। এটিও বন্ধের সময় নাশকতার আশঙ্কার কথা উল্লেখ করা হয়।

রেলের পূর্বাঞ্চলের সূত্র জানায়, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পথে চলাচলকারী ১৬ জোড়া কমিউটার ট্রেন চলাচল করে। রাত নয়টার পর চলাচলকারী এক জোড়া কমিউটার ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সারা দিন যাত্রী হলেও রাতে এই পথে তেমন যাত্রী পাওয়া যায় না বলে রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে। ফলে বাড়তি ঝুঁকি এড়াতে রাতে চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। ময়মনসিংহ থেকে জামালপুরের ভুয়াপুর পর্যন্ত একটি লোকাল ট্রেন দিনে দুবার আসা-যাওয়া করে। এটিরও চলাচল বাতিল করা হয়েছে।

ঢাকা-জামালপুরের তারাকান্দা পর্যন্ত চলাচলকারী আন্তনগর যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের চলাচলের পথ ১৫ ডিসেম্বর থেকে সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। এখন ট্রেনটি ঢাকা থেকে জামালপুর এবং জামালপুর থেকে ঢাকায় আসা-যাওয়া করছে। তারাকান্দি পর্যন্ত ট্রেন যাচ্ছে না।

রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, রাতে চলাচলকারী আরও কিছু ট্রেনের চলাচল বাতিল করার পরিকল্পনা আছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে সিলেট পথের সুরমা মেইল রয়েছে। ট্রেনটি রাত সাড়ে নয়টার দিকে টাকা থেকে ছেড়ে সারা রাত রাস্তায় থাকে। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সিলেট পৌঁছায়। আবার এটি সিলেট থেকে রাত সাড়ে সাতটায় ছেড়ে পরদিন সকালে ঢাকায় পৌঁছায়। এ ছাড়া ঢাকা থেকে নোয়াখালীর পথে চলাচলকারী ঢাকা মেইল ট্রেনটির যাত্রাও বাতিল করার পরিকল্পনা আছে। এটিও রাতে চলাচল করে।

রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই দুটি ট্রেন আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করা হয়নি। তবে ইঞ্জিনের সংকট থাকলে চলাচল বাতিল করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ট্রেন দুটির যাত্রা প্রায়ই বাতিল করা হয়েছে।

রেলের হিসাবে, গত ১৬ নভেম্বর থেকে হরতাল-অবরোধে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চারটি ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রেললাইন কেটে ফেলার একটি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার রাজধানীতে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের তিনটি বগিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় মা, শিশুসন্তানসহ চারজন মারা যান। এ ছাড়া ১৬ নভেম্বর টাঙ্গাইলে কমিউটার ট্রেনে, ১৯ নভেম্বর জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে যমুনা এক্সপ্রেসে এবং ২২ নভেম্বর সিলেটে উপবন এক্সপ্রেসে আগুন দেওয়া হয়।

গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে ১৩ ডিসেম্বর ২০ ফুট রেললাইন কেটে ফেলা হয়। এ ঘটনায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের সাতটি বগিই লাইনচ্যুত হয়েছিল। তখন একজন যাত্রী মারা যান, ৫০ জন আহত হন। আজ কুড়িগ্রামের রাজারহাটে রংপুর-কুড়িগ্রাম রেলপথের কিছুসংখ্যক ‘হুক বোল্ট’ খুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

আরো পড়ুন : যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার হুমকি দিয়েছে রাশিয়া-রয়টার্স

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *