স্টাফ রিপোর্টার : নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন আজ। জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ ও তার অনুসারী নেতারা গতকাল পর্যন্ত জাতীয় পার্টির দলীয় মনোনয়ন নেননি। রওশন এরশাদ ও তার ছেলে রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদসহ তিন জনকে দলীয় মনোনয়ন দিতে চাইছে জাপা। কিন্তু রওশন এরশাদ চাইছেন তার অনুসারী নেতাদের মনোনয়ন। এমন অবস্থায় দুই পক্ষের টানাপড়েন গড়িয়েছে শেষ দিন পর্যন্ত। গতকাল রওশন এরশাদ অনুসারী নেতারা জানিয়েছেন, আজ সমাধান না হলে তারা নির্বাচনে যাবেন না। গতকাল রওশন এরশাদের অনুসারী একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা শেষ মুহূর্তে সমঝোতার অপেক্ষায় আছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার মেয়াদ বাড়তে পারে এমনটিও আশা করছেন তারা।
পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের আসনসহ (ময়মনসিংহ-৪) ১১টি আসন শূন্য রেখে ২৮৯ আসনে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। প্রথমে নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলেও শেষ সময়ে এসে দলীয় প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করে দলটি। তবে ওই তালিকায় বিরোধী দলের নেতার ছেলে সাদ এরশাদসহ রওশন এরশাদপন্থি নেতাদের নাম নেই।
কারণ তারা কেউই দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি। দলীয় সূত্র জানায়, অনুসারী নেতারা দলীয় মনোনয়ন না পেলে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রওশন এরশাদ। অন্যদিকে রওশন ও তার ছেলে এবং ময়মনসিংহের আরেক নেতার জন্য তিনটি আসনে মনোনয়ন দিতে রাজি আছেন জাতীয় পার্টির নেতারা। এর বাইরে দলের সাবেক মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা, বিরোধী দলের নেতার রাজনৈতিক উপদেষ্টা গোলাম মসীহ, মুখপাত্র কাজী মামুনুর রশিদসহ আরও কয়েকজন নেতার মনোনয়ন চাইছেন রওশন এরশাদ। জাতীয় পার্টির নেতারা বলছেন, মশিউর রহমান রাঙ্গা দল থেকে বহিষ্কৃত। এ ছাড়া অন্যরাও নানা সময়ে দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়েছেন। এ কারণে পার্টি চেয়ারম্যান তাদের মনোনয়ন দিতে চান না। দুই পক্ষের এমন অনড় অবস্থানের মধ্যে বিভিন্ন পক্ষ সমঝোতারও চেষ্টা চালিয়েছে। সর্বশেষ একজন সরকারি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে রওশন এরশাদের বাসায় বৈঠক হওয়ার তথ্য এসেছে। এর আগে জিএম কাদেরও তার কয়েকজন নেতার মধ্যে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু জটিলতার বিষয়ে কোনো সুরাহা আসেনি।
দলীয় মনোনয়নের বিষয়ে গতকাল কাজী মামুনুর রশীদ বলেন, ম্যাডাম (রওশন এরশাদ) এখনো দলীয় মনোনয়নপত্র নেননি। তিনি যাদের মনোনয়নপত্র চাইছেন তা না দেয়া হলে নির্বাচনই করবেন না বলে জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। এই সময়ে জটিলতার সুরাহা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখা যাক। না হলে আর কিছু করার নেই। রওশন এরশাদপন্থি অন্য একজন নেতা জানিয়েছেন, তারা মনে করছেন মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় বাড়তে পারে। সময় বাড়লে একটা সমাধান হয়ে যেতে পারে।