আ.লীগের দুর্নীতির তদন্ত দ্রুত করতে নির্দেশ দিয়েছি-এম সাখাওয়াত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের দুর্নীতির তদন্ত দ্রুত করতে দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন। শুক্রবার ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ‘নর্থইস্ট নিউজ’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন।
টেলিফোনে দেওয়া ৪৫ মিনিটের ওই সাক্ষাৎকারে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ঢাকায় এবং দেশের অন্যান্য জেলায় নিহতদের বেশিরভাগই ছাত্র ও তরুণ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুলিশ বাহিনী তাদের মারধর করে বা গুলি করে হত্যা করেছে।
৫ আগস্ট নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। তাকে ‘স্বৈরাচারী শাসনের নেতৃত্বদানকারী’ আখ্যায়িত করে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তার (হাসিনার) মন্ত্রিসভার কয়েকজন মন্ত্রী, বিশেষ করে আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক এবং ওবায়দুল কাদের ছাড়াও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা রয়েছেন, যারা এই কিলিং মেশিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে আসাদুজ্জামান খান কামাল ২ হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, তিনি আওয়ামী লীগের দুর্নীতির তদন্ত ত্বরান্বিত করতে দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ১৯৪৫ পরবর্তী জার্মানিতে ঘটে যাওয়া ‘নুরেমবার্গ ট্রায়ালের’ মতোই তদন্ত হবে। এরপর একটি সর্বজনীন আদেশ জারি করা হবে, যা বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ড, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ব্যাপক তদন্ত শুরু করবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন উল্লেখ করে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তাদের শান্ত করতে আমার টানা ৫ ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে। আমি তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, হাসিনা সরকারের আমলে তারা কাকে কাকে হত্যা করেছে? কার নির্দেশে হত্যা করেছে? অফিসারদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা আমার পা ছুঁয়ে, আমাকে জড়িয়ে ধরে অনুশোচনার ভঙ্গিতে ক্ষমা চেয়েছেন।
পুলিশ বাহিনীকে কিভাবে পরিচালনা করা হবে, সে বিষয়ে ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার সুচিন্তিত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করবে। উপদেষ্টা হোসেনের মতে, বেশকিছু অফিসারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই কর্মকর্তারা মাদক ব্যবসায় লিপ্ত এবং বদলি-পোস্টিং চালিয়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করতেন। তদন্ত শেষ হলে তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
ইউনূসের নেতৃত্বাধীন শাসন ‘অদৃশ্য ষড়যন্ত্রকারী ও শত্র“ দ্বারা পরিবেষ্টিত’ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় সরকারের প্রতি তার বার্তা হলোÑআপনারা কি ঢাকায় একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সরকার চান নাকি শত্রুমনা সরকার চান? যে দেশ পরাশক্তি হতে চায়, তাকে বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী দেশের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।’
আরো পড়ুন : কলকাতায় চিকিৎসক ধর্ষণ ওত্যার প্রতিবাদে টিএসসিতে মোমবাতি প্রজ্বলন