কাওছার আহমদ, সিলেট: নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবেনা বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, দেশের তরুণ ভোটাররা ভোট দিতে পারে না। এই অবস্থায় একটি দেশ চলতে পারে না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারেক রহমানের নির্দেশনায় দেশের তরুণ সমাজ জেগে উঠেছে। এ দেশের মানুষের ভোটাধিকারসহ সকল ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়নে আজ মাঠে নেমেছে। অধিকার আদায় করেই তরুণ সমাজ ঘরে ফিরবে।
গতকাল রবিবার বিকেলে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। স্বেচ্ছাসেবকদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে এবং যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল এর যৌথ পরিচালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিশেষ বক্তার বক্তব্য দেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদেও সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ।
এছাড়াও উপস্থিত বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ও ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবকদলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ব্যবসা বাণিজ্য থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রে আওয়ামী করণ করা হয়েছে। সরকারী চাকুরিতে মেধাবী শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যোগ্যতা প্রমাণ করলেও তার পরিবার আওয়ামী বিরোধী রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় চাকুরি হচ্ছে না। এভাবে দেশের মেধাবী তরুণদের ধ্বংস করা হচ্ছে। দেশ বাঁচাতে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দেশে আর কোন নির্বাচন হবে না। এই সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আওয়ামী লীগ বলে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। কিন্তু কোন সংবিধান? যে সংবিধান আওয়ামী লীগ নিজেরাই কাটছাট করে নিজেদের মতো করেছে। সেই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে চায় তারা। অথচ বাংলাদেশের জনগন আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে- নির্বাচন হবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। বিশেষত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। তার প্রমাণ গত দুটি নির্বাচনে পাওয়া গেছে। দেশে এখন কারো ভোটাধিকার নেই। জনগন ভোট দিতে পারে না। ভোটাধিকারের কথা বললে হামলা, নির্যাতন, গুম, খুন করা হয়।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আওয়ামী লীগ কথায় কথায় উন্নয়নের কথা বলে। অথচ উন্নয়নের নামে তারা লুটপাট করছে। শতভাগ বিদ্যুতের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নেয়া হয়েছে। কেবল বিদ্যুৎ নয়, সবক্ষেত্রেই লুটপাট চলছে। যে পদ্মাসেতু নির্মাণে ১০ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন সেটির জন্য ২০ হাজার কেটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। দুর্নীতি করে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার কেবল রাস্তাঘাট বানাচ্ছে কিন্তু কোন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে না। দেশে লাখ লাখ লোক বেকার। কৃষক ফসলের দাম পায় না। অথচ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। মানুষ খেতে পারছে না। এই হলো আওয়ামী লীগের উন্নয়ন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, বর্তমান সরকার ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছে। দিনের ভোট যে রাতে হয়েছে তা সারাদেশের মানুষ জানে। আবারও ভোটচুরি করে ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করছে। এবার কিন্তু জনগণ আর সেই সুযোগ দিবেনা। দেশের তরুণ সমাজ জেগেছে। তরুণরাই আন্দোলন করে মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে।
কাওছার আহমদ