অটোরিকশা চালক ও মালিকরা অতিষ্ঠ চাঁদাবাজীর যন্ত্রণায়। মাসে কয়েক লাখ টাকা দিতে হয় তাদের। স্থানীয় প্রভাবশালী, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নামধারী নেতা থেকে শুরু করে চাঁদা দিতে হয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যকেও। রাজনীতিবিদের চাঁদাবাজির টাকা তোলা সংক্রান্ত একটি তালিকায় দেখা গেছে পল্লবীর সেকশন-১২, বক্কর মিয়ার মাধ্যমে মাসে ১৫ হাজার টাকা, ব্লকমাঠ ও লালমাঠ বাজারের তাজু মিয়ার মাধ্যমে মাসে ১৫ হাজার টাকা, সেকশন-১১ এর উল্টাবাবার মাজারের দোকানদার আবির এর মাধ্যমে ৬ হাজার টাকা, বাউনিয়াবাঁধ অটোরিকশা গ্যরেজ এর সোহাগ ও জুয়েল এর মাধ্যমে মাসে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, নাপাক রাজু ও মামুন এর মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা, এভাবে মিরপুরের পল্লবীর প্রায় ৪৩টি স্পট থেকে মাসে ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা চাঁদা তোলা হয়। পল্লবী এবং বাউনিয়াবাঁধে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার। প্রতিটি অটোরিকশা থেকে স্থানীয় গ্যারেজ মালিক জুয়েল- সোহাগ বাহিনী ৪০০ টাকা করে চাঁদা তোলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে আড্ডু বাহিনী ১৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকা করে টোকেনের মাধ্যমে চাঁদা তুলে ভাগ বাটোয়োরা করে দিতেন। এ বিষয়ে বাউনিয়াবাঁধের এক গ্যারেজ মালিক বলেন, এর আগে আড্ডু বাহিনী মাসে ১৮শ’ করে চাঁদাবাজি করতেন। এবং যেটার ভাগ সব জায়গায় পৌঁছে যেত।
বর্তমানে আড্ডু বাহিনীর অবর্তমানে জুয়েল-সোহাগ, খুরশীদ, করিম, হাসান বাহিনী প্রতি মাসে ৪শ’ টাকা করে প্রতিটি রিকশা থেকে চাঁদা নিচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তারা বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দেয়। অটোরিকশা নিয়ে যায়। অটোরিকশার তার কেটে দেয়। ব্যাটারি নিয়ে যায়। অভিযুক্ত আড্ডু বাহিনীর আড্ডুর কাছে চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা অবৈধ অটোরিকশা উচ্ছেদ এবং বিদ্যুৎ এর অপচয় রোধে সম্প্রতি মানববন্ধন করেছি। তখন জুয়েল- সোহাগ বাহিনী আমাদের লোকদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের গ্রুপের একাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। এবং একজনের অবস্থা গুরুতর। বর্তমানে নিউরোসায়েন্স হাসাপাতলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি বলেন, জুয়েল-সোহাগ বাহিনী চাঁদার টাকা তুলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেয়। চাঁদাবাজিতে অভিযুক্ত স্থানীয় গ্যাং ও গ্যারেজ মালিক জুয়েল- সোহাগ বাহিনীর জুয়েলকে ফোন দিলে তিনি বলেন, আড্ডুর গ্যাং গ্যারেজ মালিক ও অটোরিকশা চালকদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ১৮শ’ থেকে ১৯শ’ টাকা করে টোকেনমানি হিসেবে চাঁদাবাজি করতেন। সেটা তারা বিভিন্নজনকে দিতেন। আমরা সেটার প্রতিবাদ করায় আমাদের লোকদের ওপর আড্ডু বাহিনী হামলা চালায়। মারধর করে। তিনি বলেন, আমরা কোনো চাঁদাবাজি করি না। অটোরিকশা চালকদের নিয়ে আমরা একটি সমিতি চালাই। যেখানে প্রতিমাসে ১শ’ টাকা করে জমা রাখি। যেটা অটোরিকশা চালকদের বিপদে-আপদে খরচ করা হয়। স্থানীয় একটি হত্যা মামলার কারণে আড্ডু বাহিনী বর্তমানে এলাকাছাড়া। এ সুযোগে জুয়েল-সোহাগ বাহিনী চাঁদাবাজি শুরু করে। পল্লবী থানার অপারেশন কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি চাঁদাবাজির বিষয়ে কিছুই জানি না। আমাদের কাজ ক্রাইম নিয়ন্ত্রণ করা। চাঁদাবাজির সঙ্গে আমাদের যুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। আমরাতো ট্রাফিক পুলিশ না।
আরো পড়ুন : চতুর্থ বারের মতো হজ নিবন্ধনের সময় বাড়িয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়