প্রকাশ্যে যত কথাই বলুক ভিতরে ভিতরে ভোটের প্রস্তুতি জাতীয় পার্টির

জনপ্রতিনিধি নির্বাচন প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি হ্যালোআড্ডা

শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেবে জাতীয় পার্টি। শিগগিরই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেবে। শনিবার বা রবিবার থেকেই দলীয় মনোনয়র ফরম বিক্রি শুরু হবে। দলটির একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। যদিও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর এখনো প্রকাশ্যে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেননি দলটি। দলটির একপক্ষ তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে।

অপর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু ভোট হবে কি না তা নিয়ে তাদের শঙ্কা রয়েছে। প্রকাশ্যে দলের নেতারা যত কথাই বলুক না কেন ভিতরে ভিতরে নির্বাচনে যাওয়ার সব প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

জাতীয় পার্টির নীতিনির্ধারকরা জানান, সরকার ও বিদেশি বন্ধুদের চাপ উপেক্ষা করে নির্বাচন বর্জন করা সম্ভব নয়। এ ছাড়া রয়েছে দল ভাঙার ভয়ও। কারণ ইতোমধ্যেই দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির তৃণমূলের নেতারা বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন বর্জনের পক্ষে। গত মঙ্গলবার জাপার কেন্দ্রীয় কমিটি এবং জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সভায় ৫৯ নেতার দুজন বাদে সবাই বলেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে তারা থাকতে চান না। ওই সভায় অনেক আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে। এখন পর্যন্ত দলের মধ্যে প্রকাশ্যে যত কথাই হোক না কেন, ভিতরে ভিতরে নির্বাচনের অংশ নেওয়ার সব প্রস্তুতি চলছে। খুব শিগগিরই আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেবে দলটি। সেই সঙ্গে আগামী শনিবার বা রবিবার থেকে দলের মনোনয়ন ফরম বিক্রিও শুরু হবে বলে দলের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। জাপার দায়িত্বশীলরা বলছেন, নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আরেক কারণ দলের ভাঙন ঠেকানো। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করেছিলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। কিন্তু রওশন এরশাদকে সামনে রেখে দলের একাংশ বিএনপিবিহীন সেই নির্বাচনে অংশ নেয়। জাপার একজন কো-চেয়ারম্যান বলেছেন, তৃণমূলের নেতারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে হলেও দলের ২৩ এমপির অধিকাংশ ভোট বর্জনের বিপক্ষে। জি এম কাদের নেতৃত্বাধীন জাপা নির্বাচন বর্জন করলে দলের বহু নেতা এমপি হওয়ার প্রলোভনে রওশন এরশাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে ভোটে অংশ নেবেন। সরকারের সমর্থন থাকায় রওশনপন্থিদের হাতে দলের নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে। রওশনপন্থিরা এ সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন। ৪ নভেম্বর জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর বাসায় জি এম কাদেরের সভাপতিত্বে কো-চেয়ারম্যানদের বৈঠক হয়। অধিকাংশরাই নির্বাচনে অংশগ্রহণের পক্ষে মত দিয়েছেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আওয়ামী লীগকে বার্তা দেওয়া হবে জি এম কাদেরের একক নেতৃত্বে জাপা নির্বাচনে অংশ নেবে। সরকার আসন ভাগাভাগিসহ নির্বাচনের সব বিষয় জি এম কাদের গ্রুপের সঙ্গেই ফয়সালা করতে হবে। জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূইয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, বুধবার রাত পর্যন্ত জাতীয় পার্টির নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত হলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। তবে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি।

অোরো পড়ুন : পুরুনো প্রতারক এবার ডিআইজির ভাই পরিচয়ে গ্রেফতার

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *