পশ্চিমাদের সমালোচনার মাঝে প্রথমবারের মতো পরমাণু যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাশিয়ার সহায়তায় এ অর্জন বাংলাদেশের। পাশাপাশি মস্কোর সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক আরও জোরালো করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান হস্তান্তর উপলক্ষে শেখ হাসিনার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ সময় তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের পুরতান বন্ধু এবং অংশীদার।’
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পে খরচের ৯০ শতাংশ ঋণই দিয়েছে মস্কো। উদ্দেশ বাংলাদেশের দীর্ঘস্থায় বিদ্যুৎ সংকটের সমাধান করা।
পুতিন ইউরেনিয়াম সরবরাহ, খরচ করা জ্বালানি রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার জন্যও সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা এই অর্জনকে বাংলাদেশের জনগণের জন্য গর্ব ও আনন্দের দিন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বক্তৃতায় তিনি নির্দেশনা ও সহায়তার জন্য পুতিনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
রাজধানী ঢাকা থেকে ১৭৫ কিলোমিটার পশ্চিমে নদীর তীরে অবস্থিত রূপপুরে পারমাণবিক কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে।
বাংলাদেশের প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বুধবার ফ্যাসিলিটি পরিদর্শনে সাংবাদিকদের বলেন, দুটি ১২০০-মেগাওয়াট ইউনিটগুলোর মধ্যে প্রথমটি কাজ পরের বছর শুরু হবে এবং উভয় চুল্লী ২০২৫ সালে সম্পূর্ণ চালু হবে।
রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা রোসাটমসহ গত বছর ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসনের পর থেকে গুরুত্বপূর্ণ রুশ সংস্থাগুলোর ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে নির্মাণ কাজে দেরি হয়েছে। কারণ মার্কিন মুদ্রায় ঋণ পরিশোধ করার সামর্থ বাংলাদেশের ছিল না।
নিষেধাজ্ঞা এড়াতে বাংলাদেশ এপ্রিল মাসে চীনা ইউয়ানে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ প্রদান করতে সম্মত হয়। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, টাকা এখনো পরিশোধ করা হয়নি।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ গত মাসে প্রথমবারের মতো ঢাকা সফর করেন। তিনি ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের’ মাধ্যমে বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেছেন।
রূপপুর প্ল্যান্টটি শেখ হাসিনা সরকারের সবচেয়ে ব্যয়বহুল অবকাঠামো প্রকল্প। বাংলাদেশে আরও বেশ কিছু কয়লা এবং গ্যাস-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন আছে কিন্তু জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর প্রায় সম্পূর্ণ নির্ভরতা কমাতে পরমাণু শক্তির দিকে নজর।
আরো পড়ুন : ডেঙ্গুতে আরও ৯ জনসহ মোট ১০৫৫ জনের মৃত্যু, ২৫৬৪ জনসহ মোট আক্রান্ত ২১৬৮৬৪ জন