নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের আনুকূল্যে বর্তমান সরকার টিকে আছে কিনা প্রশ্ন রেখে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাখ্যা দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি এই দাবি জানান।
জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনাসভা হয়। বিএনপি মহাসচিব বিকালে মিলনায়তন প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
তিনি বলেন, গত পরশু ঢাকায় আওয়ামী লীগের মিছিল-সমাবেশ হয়েছে। সেখানে মন্ত্রীরা হুমকি দিয়েছেন, হুংকার দিয়েছেন, সন্ত্রাসী ভাষায় কথা-বার্তা বলেছেন। এতই যদি আপনারা হুমকি দেন, ধামকি দেন তাহলে আবার আপনাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আপনাদের সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য, প্রধানমন্ত্রীকে টিকিয়ে রাখার জন্য ভারতের সাহায্য দাবি করেন কেন?
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়ে তিনি বলেন, সরকার, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভারত সরকারের কাছে আমাদের প্রশ্ন পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে কথা বলেছেন সেই কথার অর্থ কী? তাতে কি এটা দাঁড়ায় যে সরকার টিকে আছে ভারতের আনুকূল্যে? এ কথার অর্থ মানুষ তো জানতেই চাইবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখন প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশ কি সত্যিকার অর্থে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র থাকবে, নাকি থাকবে না। বাংলাদেশ কি সত্যিকার অর্থেই একটা গণতান্ত্রিক দেশ থাকবে, নাকি থাকবে না। বাংলাদেশ কি সত্যিকার অর্থে কি মানুষের অধিকারগুলো ফিরিয়ে এখানে একটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ তৈরি করবে, নাকি করবে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের সমস্ত অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছে, সংবিধানকে পরিবর্তন করেছে, মানুষের ভোট দেওয়ার ক্ষমতাকে হরণ করে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানকে তারা বাতিল করে দিয়েছে।
সরকারকে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এত চ্যালেঞ্জ করবেন না। ক্ষমতা ছাড়ুন, ক্ষমতা ছেড়ে রাস্তায় নামুন। দেখা যাবে এদেশে জনগণের শক্তি বেশি না আপনাদের মতো দুর্নীতিবাজদের শক্তি বেশি। অবশ্যেই আপনাদের ক্ষমতা ছাড়তে হবে। ক্ষমতায় থেকে অনেক লম্বা লম্বা কথা বলা যায়। ক্ষমতা ছেড়ে আসুন তখন বোঝা যাবে আপনার শক্তি কত?এদেশে কয়টা লোক আপনার পক্ষে আছে তখনই বোঝা যাবে।
সরকারকে আর সময় দেওয়া হবে না জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারকে আর কোনো সময় দেওয়া যাবে না। এখন জনগণের ঐক্য গড়ে তুলে একই সঙ্গে রাস্তায় রাজপথ দখল করে নিয়ে এদের পরাজিত করতে হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব, আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেবকে দেশে ফিরিয়ে আনব, ৩৫ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা আছে সেই মামলা প্রত্যাহার করব এবং এই সরকারকে বাধ্য করব পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং নতুন নির্বাচন কমিশনর গঠন করে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার ও জনগণের পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে। স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জনগণের কাছে আহ্বান আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই, আমরা আমাদের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনি।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদরেজ জামান ও সাইফুল ইসলাম ফিরোজের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, ফজলুল হক মিলন, কামরুজ্জামান রতন, মীর সরফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, যুব দলের সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম সারোয়ার, ইয়াসীন আলী, এসএম জিলানী, ফখরুল ইসলাম রবিন প্রমূখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।
আরো পড়ুন : আওয়ামী লীগ কোনো বিদেশি শক্তির শক্তিতে নয়, দেশের জনগণের শক্তিতে বলিয়ান