বিশেষ প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় গণভবনে সপরিবার তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন কাল শনিবার। এর আগের দিন তাঁর এই সাক্ষাতের ঘটনায় নানা জল্পনাকল্পনা চলছে।
সাক্ষাতের পর জানতে চাইলে কাদের সিদ্দিকী বলেন, তিনি সন্ধ্যা ছয়টার দিকে গিয়েছিলেন। ঘণ্টা দেড়েক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর আলাপ-আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই তাঁকে ডেকেছিলেন বলে জানান কাদের সিদ্দিকী।
কাদের সিদ্দিকী একসময় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগ ছেড়ে নিজে দল গঠন করেন। সেই আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগের দিন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের পেছনে কেউ কেউ পুনরায় ক্ষমতাসীন দলে ফিরে যাওয়ার ইঙ্গিত মনে করছেন। এ বিষয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘যে কেউ স্পেকুলেশন করতে পারে। আমার কিছু বলার নেই। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ডেকেছেন, তাই কারণটা তাঁর কাছ থেকেই জেনে নেওয়া ভালো।’
কী কথা হয়েছে জানতে চাইলে কাদের সিদ্দিকী বলেন, অনেক কথা হয়েছে, গল্প হয়েছে। তাঁর পরিবারের সদস্যরাও নানা বিষয়ে গল্প করেছেন। সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয়ে কোনো আলাপ হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘দুজন রাজনীতির মানুষ যখন এক হয়, তখন তো রাজনৈতিক আলাপ হবেই।’
শেখ হাসিনাকে বোনের মতো দেখেন, মায়ের মতো শ্রদ্ধা করেন বলে জানান কাদের সিদ্দিকী। তাহলে সেই শ্রদ্ধেয় রাজনৈতিক ব্যক্তির নেতৃত্বে পুনরায় রাজনীতি করার সম্ভাবনা তৈরি হলো—এই প্রশ্নের জবাবে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ ছেড়ে এসেছি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে বুকে ধারণ করি, লালন করি।’ তাহলে বঙ্গবন্ধুর দল, তাঁর কন্যার দলে কি আপনার নতুন পথচলা শুরু হবে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই।’
২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপির নেতৃত্বে যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছিল, এতে কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগও ছিল। ওই নির্বাচন নিয়ে অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে তিনি দুই দফা ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ঐক্যফ্রন্ট আর সক্রিয় নেই। বিএনপি সমমনা দলগুলোকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে ঐক্যফ্রন্টের অনেক দলও আছে।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র বলছে, বিএনপি যেমন যুগপৎ আন্দোলনে নামার জন্য রাজনৈতিক মিত্র বাড়াচ্ছে, তেমনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরও মিত্র বাড়ানোর চিন্তা আছে। ক্ষমতাসীনদের জোট ১৪ দলে নতুন দল অন্তর্ভুক্ত এবং সমমনাদের নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ার চিন্তা আছে। কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ১৪-দলীয় জোটে অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা আছে। কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগে ফিরে আসার জন্য আগে চেষ্টা চালিয়েছেন। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার দায়ে তাঁর ভাই লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা এবং দল থেকে বাদ দেওয়ার পর তিনি আওয়ামী লীগে ভিড়তে চাইছিলেন। ফলে আজকের এই সাক্ষাৎকে কেউ কেউ তাঁর আওয়ামী লীগে ফেরার প্রক্রিয়ার অংশ বলে মনে করছেন।
আরো পড়ুন : দুই মাসের বেশি হলো স্কুলছাত্রী তুলির সন্ধান কেউ দিতে পারল না