প্রার্থী বাছাই করতে গিয়ে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ছে আওয়ামী লীগ

নির্বাচন প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি হ্যালোআড্ডা

আগামী নির্বাচনের জন্য এরইমধ্যে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। কিন্তু বাছাই করতে গিয়ে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ছে বলে জানান দলটির কেন্দ্রীয় কয়েক নেতা। তারা বলেন, প্রার্থী বাছাইয়ে মূল চ্যালেঞ্জ একই আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থী। প্রত্যেকেরই আবার রয়েছে নিজস্ব বলয়। দল থেকে বারবার নিজস্ব বলয় তৈরি নিয়ে সতর্ক করা হলেও বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। প্রায় প্রতিটি আসনেই রয়েছে একাধিক প্রার্থী। তাদের অনেকেই আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে আছেন।

এলাকায় নিয়মিত গণসংযোগ করছেন। আবার কেন্দ্রের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছেন। সবমিলিয়ে প্রার্থী বাছাই করতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানান দলটির শীর্ষ নেতারা। সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে দেশের ৮ বিভাগের সাংগঠনিক টিম দলের সার্বিক সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে রিপোর্ট দাখিল করেছে।

রিপোর্টে প্রার্থী বাছাইয়ের এসব চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়েছে। এক সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, নির্বাচনের খুব বেশি দেরি না থাকায় আমরা অনেকটা নীরবেই প্রার্র্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছি। নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের প্রার্থীরা নির্বাচনের মাঠে নেমে পড়বে। তখন তারা জনগণের দোরগোড়ায় গিয়ে ভোট প্রার্থনা করবে।

তিনি বলেন, শেষ মুহূর্তে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে যেন কোনো ধরনের তাড়াহুড়ো করতে না হয় সেজন্য এভাবে প্রার্র্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করা হয়েছে। অন্যদিকে দলীয় নির্দেশনা রয়েছে- আগামী নির্বাচনে দল যাকে নৌকা প্রতীক দেবে তার পক্ষে নির্বাচনে কাজ করতে হবে। যারা বিরোধিতা করবে বা নিষ্ক্রিয় থাকবে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক্ষেত্রে দল থেকে বহিষ্কারকেই সর্বোচ্চ শাস্তি বলে ধরে নেয়া হচ্ছে।

আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাই প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আগামী নির্বাচন আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং নির্বাচন। বিএনপি যতই উস্কানি দিক আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবো। তাই জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন সেই প্রার্থীকে নিয়ে জনগণের দরজায় দরজায় গিয়ে ভোট ভিক্ষা করে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আমাদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যেতে হবে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এদেশে আর কোনো আগস্ট ঘটাতে দেয়া হবে না। ওই খুনির দল বিএনপিকে আর সেই সুযোগ দেয়া হবে না। আগামী নির্বাচনেও আমরা এগিয়ে যাবো। কেউ আমাদের ঠেকাতে পারবে না। তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে অনেক ষড়যন্ত্র হতে পারে।

এসব বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এর আগে সারা দেশের সাংগঠনিক অবস্থা তদারকি করতে ৮টি বিভাগীয় কমিটি গঠন করে আওয়ামী লীগ। তাদের মূল দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে-অনুপ্রবেশকারী ও বিভিন্ন সময় দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া বিদ্রোহীদের চিহ্নিত করা, দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিতে তারা যাতে পদ না পায়, সে বিষয়ে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করা, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের ব্যক্তিগত অনুসারীদের কমিটিতে প্রাধান্য হচ্ছে কিনা তা তদারকি করা। সম্প্রতি নির্বাচনকে টার্গেট করে ওই ৮ টিমকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়েও কাজ করতে বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে দেশের ৮ বিভাগের দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে।

দলের ৪ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের ওপর দুটি করে বিভাগের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিটি বিভাগের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে একজন করে সাংগঠনিক সম্পাদককে। ৪ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দায়িত্ব পেয়েছেন ড. হাছান মাহমুদ। মাহবুব উল আলম হানিফ পেয়েছেন সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্ব। আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম দলের হয়ে পালন করবেন খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দায়িত্ব। আর দীপু মনি পেয়েছেন ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্ব। দলটির ৮ সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে আহমদ হোসেন সিলেটের, বিএম মোজাম্মেল হক খুলনার, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন চট্টগ্রামের, এসএম কামাল হোসেন রাজশাহীর, মির্জা আজম ঢাকার, আফজাল হোসেন বরিশালের, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ময়মনসিংহের ও সুজিত রায় নন্দী রংপুর বিভাগের দায়িত্ব পেয়েছেন।

আরো পড়ুন : শ্রীলঙ্কা মূল্যস্ফীতি কমাতে পাড়লেও বাংলাদেশে পারছে না কেন?

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *