রাজধানীর বঙ্গবাজারে ধ্বংসস্তুপের উপরে বসেছে চৌকি। এতে ঈদের বাহারি পোশাক সাজিয়েছেন সব হারানো ব্যবসায়ীরা।
তপ্ত রোদে খোলা আকাশের নিচে শুরু করেছেনে বেচা-বিক্রি। চেষ্টা করছেন কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে টিকে থাকার।
এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের দুই কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলছেন, চৌকিতে বসিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়েছে। ঈদের পর পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
বুধবার সকালে বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডস্থল ঘুরে দেখা যায়, চৌকি বসিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ দিতে বঙ্গবাজারের দুর্ঘটনাস্থল প্রস্তুত করা হচ্ছে। ১ দশমিক ৭৯ একরের খোলা জায়গা থেকে আগুনের পোড়া স্তুপ সরানো হয়েছে। বালু ফেলে ইট বিছিয়ে সমতল করা হয়।
ব্যবসায়ীরা মালিক সমিতির চিহ্নিত করে দেওয়া জায়গায় চৌকি নিয়ে বসেন। অগ্নিকাণ্ডের আগে যেখানে দোকান ছিল, সেখানেই বসেন তারা। খোলা আকাশের নিচে বসানো চৌকিতে পোশাকাদি সাজিয়ে রাখেন অনেকে। কেউ কেউ আবার কেবল চৌকি বসলে জায়গা দখলে রাখেন।
তবে তাদের কারও মাথার ওপর ত্রিপল বা অন্য কিছু দিতে দেখা যায়নি। বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির নেতাদের চৌকি বসানোর সামগ্রিক কার্যক্রম তদারকি করতে দেখা গেছে। বিকেলের পর কিছুটা জমজমাট হয়ে ওঠে অস্থায়ী এ বাজার।
অস্থায়ী কার্যক্রম দুপুর ১টার দিকে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন ও বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র ফজলে নূর তাপস বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য তহবিল গঠন চলছে, প্রধানমন্ত্রী সেই তহবিলে টাকা দেবেন। কীভাবে ক্ষতিপূরণের টাকা বণ্টন করা হবে, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী, ব্যবসায়ী নেতা, ঢাকা চেম্বার, সবার সঙ্গে বসে কার কত ক্ষতি হয়েছে, সেটা ঠিক হবে। এরপর সে অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের টাকা নির্ধারণ করা হবে।
এদিকে চৌকিতে দোকান বসিয়ে বিকিকিনি শুরু হলে ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতারা আসতে শুরু করেন।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, রোদের কারণে ক্রেতার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। তাছাড়া সব ব্যবসায়ী প্রস্তুতির অভাবে বিক্রি শুরু করতে পারেননি। আর ক্রেতাদের অনেকে বিক্রির জানতে পারেননি। সেকারণেই ক্রেতা কম। উপরে ছাউনি দিলে এবং গরম কমলে ক্রেতার উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা তাদের।
ডেমরা থেকে আসা জাহিদ হাসান নামের এক ক্রেতা জানান, তিনি মূলত ঘটনাস্থলের অবস্থা দেখতে এসেছেন। যে কয়টি চৌকিতে পণ্য উঠেছে সেগুলো ঘুরে দেখেছেন। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় তিনি ঈদে এখান থেকেই কেনাকাটার চিন্তা করছেন বলে জানান।
প্রসঙ্গত, গত ৪ এপ্রিল সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে আগুন লাগে। এতে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের বঙ্গবাজার মার্কেট, মহানগরী মার্কেট, আদর্শ মার্কেট ও গুলিস্তান মার্কেটের সব দোকান পুড়ে যায়। এছাড়া মহানগর শপিং কমপ্লেক্সের ৭৯১টি দোকান পুড়ে যায়।
এছাড়া এনেক্সকো টাওয়ার, বঙ্গ ইসলামীয়া ও বঙ্গ হোমিও মার্কেটে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় ওইদিন দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
আরো পড়ুন : আমেরিকাকে তাইওয়ানের ব্যাপারে রেডলাইন অতিক্রম করতে দেবে না চীন